রশি টানতেই মাছের সঙ্গে উঠে এলো দেলোয়ারের মরদেহ
বিশেষ কৌশলে নদীর গভীর থেকে মাছ শিকারে পটু সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জের দেলোয়ার হোসেন (৪০)। গত কয়েকবছরে এভাবে কয়েক লাখ টাকার মাছ শিকার করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরেও সেভাবেই মাছ ধরতে বীরশ্রী ইউনিয়নের পূর্ব জামডহর গ্রামের পার্শ্ববর্তী কুরিয়ারবন্দ নামক এলাকার কুশিয়ারা নদীতে গিয়েছিলেন দেলোয়ার ও তার সঙ্গীরা।
দেলোয়ার বিকেলের দিকে অক্সিজেন সঞ্চালন মাস্কসহ পানিতে ডুব দেন। কিন্তু কিছু সময় পর ৩০ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছের সঙ্গে তার সঙ্গীরা নদী থেকে দেলোয়ারের মরদেহ উত্তোলন করেন। মৃত দেলোয়ার হোসেন জকিগঞ্জ উপজেলার বারঠাকুরী ইউনিয়নের আমলশীদ (দিঘীরপার) গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসলাম উদ্দিন ইছু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পেশায় মাছ শিকারি দেলোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনজন সঙ্গীসহ নৌকা নিয়ে কুশিয়ারা নদীর কুরিয়ারবন্দ ডহরে মাছ ধরতে যান। পরে তিনি মাছ ধরতে নৌকা থেকে অক্সিজেন মাস্কসহ নদীতে ডুব দেন। দীর্ঘ সময় তিনি পানির নিচে অবস্থান করায় নৌকায় থাকা তার সঙ্গীরা রশি ধরে টান দেয়। এসময় প্রায় ৩০ কেজি ওজনের জীবিত বাঘাইড় মাছের সঙ্গে দেলোয়ারের মরদেহ উঠে আসে। পরে জকিগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে তারা এসে মরদেহ ও মাছ উদ্ধার করে জকিগঞ্জ থানা নিয়ে যান।
বিষয়টি নিয়ে দেলোয়ারের ছোট বোন আমিনা বেগম বলেন, আমার ভাই কানাডা যাওয়ার জন্য গত ৩১ জানুয়ারি কানাডা এম্বেসির কাছে কাগজপত্র ও ফিঙ্গার দিয়ে এসেছে। এরপর দিন তিনি কুশিয়ারা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন।
জকিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, বাঘাইড় মাছ বেশ শক্তিশালী। ধারণা করা হচ্ছে মাছটিকে ওপরে তোলার সময় ধস্তাধস্তি করতে গিয়ে কোনোভাবে অক্সিজেনের মাস্ক মুখ থেকে খুলে গিয়ে তিনি শ্বাসরোধে মারা যান।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাসুদ আহমদ রনি/আরকে