ভালো দামে দারুণ খুশি তিস্তার চরের পেঁয়াজ চাষিরা
কুড়িগ্রামের তিস্তার চরের বালু মাটিতে কৃষকেরা ফলিয়েছেন বিভিন্ন জাতের ফসল। এর মধ্যে ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে শুধু পেঁয়াজই আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। বাজারে ভালো দাম থাকায় পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের বিভিন্ন চঞ্চলের ৪৫ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন প্রকার আবাদ করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে শুধু তিস্তার চরে এ বছর ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে শুধু পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে জেলায় ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে।
তিস্তা পাড়ের কৃষকরা বলছেন, এ বছর বন্যায় ভারত থেকে পানির সাথে কাদা পানি আসার ফলে তিস্তা নদীতে বালু মাটিতে পলি জমেছে। ফলে এসব জমিতে বিভিন্ন আবাদ ভালো হয়েছে।
উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি সাদিকুল ইসলাম বলেন, ২০ শতক জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছি, ফলন খুব ভালো হয়েছে। প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি করছি ২ হাজার ৩০০ টাকা দরে। আল্লাহর রহমতে খরচ বাদ দিয়ে ভালোই লাভ হবে।
আরও পড়ুন
একই এলাকার আইয়ুব আলী বলেন, চার শতক জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। কিছু খাব, আর কিছু বিক্রি করব। পরের বছর এর চেয়ে বেশি আবাদ করার চিন্তা ভাবনা আছে।
আরও এক পেঁয়াজ চাষি রহিম মিয়া বলেন, আমি একবিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে তুলে বিক্রি করব। তারপর এখানে বাদাম চাষ করব। বারোমাস এমন চাষাবাদ করতে পারলে আমাদের অভাব থাকতো না। কিন্তু বন্যা আর নদী ভাঙনে আমরা শেষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা নদীটি নীলফামারী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে লালমনিরহাট হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলা হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে ১১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীটি কুড়িগ্রাম অংশে পড়েছে ৪২ কিলোমিটার। অপর দিকে ব্যাপক পরিসরে তিস্তার চরে বিভিন্ন চাষাবাদ হওয়ার কারণে খুশি দিনমজুর মানুষ। কেন না নিয়মিত কাজ থাকায় সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছতা। প্রতিদিন তিস্তার চরে কাজ করছেন শত শত নারী পুরুষ শ্রমিক।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আমাদের কুড়িগ্রাম জেলায় এ বছর ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর তিস্তার চরের জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। চরে সবসময় পেঁয়াজের আবাদ ভালো হওয়ার কারণে দিনদিন পেয়াজের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে চরে। এসব পেঁয়াজ বিক্রি করে কৃষকেরা ভালোই লাভবান হবে।
এমএ