তীব্র শীতের সঙ্গে বৃষ্টি, চরম ভোগান্তিতে উপকূলের মানুষ
টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সূর্যের তেমন একটা দেখা মিলছে না উপকূলে। ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে মাঘের হাড়কাঁপানো শীত। সঙ্গে যোগ দিয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ উপকূলের ভাসমান মানুষ।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সারাদিন উপকূলের আকাশ মেঘে ঢাকা থাকলেও বৃষ্টি হয়নি। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হয়েছে পুরো উপকূল জুড়ে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার স্থানীয় কৃষক, নিম্ন আয়ের মানুষ,ও কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
স্থানীয়রা জানান, কলাপাড়ায় গত একমাস ধরে ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। মাঘ মাসের শুরু থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় গত কয়েকদিন দেখা মেলেনি সূর্যের। এতে ক্রমাগত তাপমাত্রা নিম্নমুখী হচ্ছে। এরমধ্যে থেকে যোগ হয়েছে বৃষ্টি। এ বৃষ্টিতে শীতের দাপট আরও বেড়েছে। এতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন খেটে খাওয়া, ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ এবং কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
কুয়াকাটায় বরিশাল থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক সাদিয়া রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শীত মৌসুমে ভ্রমণ করা আমার পছন্দের। আর সেজন্য পরিবারসহ কুয়াকাটায় বেড়াতে আসছি কিন্তু কুয়াকাটায় আসতেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। আমরা সবাই এখন হোটেল বন্দী হয়ে পড়েছি। এমন তীব্র ঠান্ডা ও বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে গেলাম কুয়াকাটায় এসে।
ভ্যান চালক আল-আমীন হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অনেক দিন ঠিকমতো রোদ ওঠে না। শীতে রাস্তায় মানুষের চলাচল অনেকটা কমে গেছে। এর মধ্যে শুরু হলো বৃষ্টি। কনকনে শীতে হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে আমাদের। তবে বাড়িতে বসে থাকলে তো আর মুখে খাবার জুটবে না। তাই বাধ্য হয়ে এই শীত-বৃষ্টির মধ্যে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি।
কুয়াকাটার মেলাপাড়া গ্রামের কৃষক জলিলুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় তিন একর জমিতে চাষাবাদ করেছি। তরমুজ চাষ করেছি ২ একর জমিতে আর এক একরে দিয়েছি বিন্দু মরিচ। এখন এভাবে যদি বৃষ্টি হতে থাকে তাহলে খেতের সব চারাগুলো পচে যাবে। এখন পর্যন্ত দুই লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। কি যে করবো বুঝতে পারছি না।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে জেলার কলাপাড়াসহ উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির প্রভাবে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। আগামী ২৪ ঘণ্টা এমন মেঘাচ্ছন্ন থাকবে উপকূলের আকাশ। তবে শীতের তীব্রতা আরও বেশকিছু দিন থাকবে।
এসএম আলমাস/এএএ