‘মিষ্টি রোদের অপেক্ষায় চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ’
কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের জনজীবন। সীমান্তবর্তী এই জেলায় দেখা মেলেনি সূর্যের। তবুও অনেকেই দুপুরের মিষ্টি রোদের অপেক্ষা করেন। যদিও কয়েকদিন থেকে সেটারও দেখা পাচ্ছে না এই অঞ্চলের মানুষেরা। যার ফলে তিস্তা ও ধরলার ৬৮টি চরাঞ্চল দরিদ্র মানুষের অবস্থা চরম শোচনীয়। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে কুয়াশার পাশাপাশি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হচ্ছে। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বেরচ্ছে না।
জেলার বিভিন্ন বাজারগুলোয় তেমন দোকান-পাট খোলেনি। লোকজনের চলাচলও স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। তারপরও পেটের টানে কিছু শ্রমিক ঘর থেকে বেরিয়েছেন। শীতের পোশাক না থাকায় নিম্ন আয়ের অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। এতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। তিস্তা পাড়ের শিশু বৃদ্ধ সবাই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। এদিকে লালমনিরহাট সদরসহ জেলার ৬টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩০ শিশু ও বৃদ্ধ। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা ও সামাজিক সংগঠনসহ সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করছেন।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পযর্বেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, তাপমাত্রা ৮.৪ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে থেকে এই জেলায় সূর্যের আলো পাওয়া যাচ্ছে না। রাতে ঠান্ডার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। সন্ধ্যা থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে এবং সকাল বেলা চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে যায়।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প অফিসার (পিআইও) ফেরদৌস আহম্মেদ জানান, গত কয়কদিন থেকেই বিভিন্ন শীতার্ত ও ছিন্নমুল মানুষদের কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এই শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যহত থাকবে। ঠান্ডায় যেন কেউ কষ্টে না থাকে সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যানদের ছিন্নমূল মানুষের তালিকা দিতে বলা হয়েছে। সেই হিসাবে কম্বল ও শীতবস্ত্র দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, ইতোমধ্যেই জেলায় প্রায় ৩০ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও চাহিদা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব শীতার্ত অসহায় মানুষ যাতে শীতে কষ্ট না করে সেজন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আর তাপমাত্রা কম থাকায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে