এক মায়ের আকুতি!
‘আমার সাত বছর বয়সী ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী। সারাদিন কোলে করে নিয়ে থাকতে হয় তাকে। আমরা তো গরিব। ছেলে জন্ম হওয়ার পর থেকে চিকিৎসা করতে যা টাকাপয়সা ছিল, সব শেষ হয়ে গেছে। তবু ছেলেটাকে সুস্থ করতে পারলাম না। আল্লাহ পাক সুস্থ না করলে কিছু করার নাই। আমাদের কোনো জমিজমা নাই। দিন করে দিন খাই। ছেলের জন্য একটা হুইলচেয়ার কিনব, তাও পারি না।’
এভাবেই কথাগুলো বলেছিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধী আল আমিন (৭) নামের এক শিশুর মা আমিনা বেগম। আল আমিন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের কাছারির ঘাট গ্রামের ছক্কুর মিয়ার ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিনমজুর ছক্কু মিয়ার জীবন জীবিকা নির্বাহের তাগিদে পাড়ি দিয়েছেন রাজধানী ঢাকায়। তার দুই ছেলে, এক মেয়ে। তাদের মধ্যে আল আমিন (৭) জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। আল আমিন শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে পরিচয়পত্র পেলেও এখনো সরকারি ভাতার আওতায় আসেনি।
আমিনা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেক টাকা ঋণ করেছি। এখনো অনেকের টাকা শোধ করতে পারিনি। একটা হুইলচেয়ার থাকলে ছেলেকে তাতে রেখে সংসারের কাজ করতে পারতাম। এতে অনেক সুবিধা হতো আমার। ছেলে আমার প্রতিনিয়ত অসুস্থ থাকে। এখন পর্যন্ত জ্বর ভালো হচ্ছে না। সরকারিভাবে বা কোনো বিত্তবান যদি আমার ছেলেকে একটা হুইলচেয়ার দিতেন, অনেক উপকার হতো।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছক্কু মিয়া দিনমজুরি করে খান। এক দিন কাজ না করলে সংসার চলে না। তার ছেলেটি জন্মের পর থেকে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। ছেলের জন্য অনেক টাকা খরচ করছেন তিনি। কিন্তু সুস্থ হয়নি।
উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান মিল্টন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুটি যদি প্রতিবন্ধী ভাতা না পায়, অনলাইনে আবেদন করে কাগজপত্র জমা দিলে ভাতা পাস হয়ে যাবে। আর হুইলচেয়ারের জন্য কুড়িগ্রাম প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করলে সেখান থেকে হুইলচেয়ার পাওয়া যাবে।
কুড়িগ্রাম প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই শিশুর পরিবারের লোকজন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমার অফিসে জমা দিলে একটি হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
মো. জুয়েল রানা/এনএ