রাজনীতিকে অনেকেই ধান্দা হিসেবে নিয়েছে : শামীম ওসমান
বিএনপিকে সহিংসতা পরিহারের আহ্বান জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, রাজনীতি মহৎ পেশা, কিন্তু জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে অনেকেই একে ধান্দা হিসেবে নিয়ে রাজনীতিকে পঁচিয়ে ফেলেছে। রাজনীতি করুন, আমার বিরুদ্ধে বলুন, কিন্তু সহিংসতা করবেন না। আমার এই কথাকে কেউ দুর্বলতা ভাববেন না।
তিনি বলেন, সামনের একটা-দুইটা-তিনটা মাস ক্রুশিয়াল টাইমস (গুরুত্বপূর্ণ সময়)। যারা সকাল-বিকেল আপনাদের স্বপ্ন দেখিয়েছিল যে আগামীকাল ক্ষমতায় আসবে, সরকার পড়ে যাবে তারা আবার বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করতে পারে।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা ও ইভটিজিং বন্ধে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক রাস্তা, স্কুল-কলেজ হয়েছে, এতে মানুষ খুশি হয়েছে। কিন্তু এবার আমি মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ইভটিজিং, ভূমিদস্যুতা বন্ধ করতে চাই। এই মাদক থেকেই কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির সৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে হয়তোবা আমার লোকজন, পুলিশ, প্রশাসন, সাংবাদিকরা জড়িত আছেন। মাদক বন্ধ করা আমাদের ডিউটি না, এটি পুলিশের কাজ। তবুও আল্লাহকে খুশি করতে মাঠে নামছি। আমার মৃত্যুর পরে যাতে আপনাদের মন খারাপ হয়। কিন্তু এই সমস্যা আমার একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কাবা শরিফের সামনে দাঁড়িয়ে আমি যে ওয়াদা করেছিলাম, সেই কাজ আমি শুরু করতে চাই। এতে সমাজের সবাইকে পাশে চাই।
সামাজিক সমস্যাগুলো সমাধানে ‘প্রত্যাশা’ নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে এই সংগঠনে মূল উদ্দেশ্য। সিনিয়ররা তাদের দিকনির্দেশনা দেবেন। প্রয়োজনে ডোপ টেস্ট করে তাদের নেওয়া হবে, যাতে রক্ষকই ভক্ষক হয়ে না যায়। এই পরিকল্পনার মধ্যে কোনো রাজনীতি নেই৷ সব দল, শ্রেণি-পেশার মানুষকে আমি আহ্বান জানাচ্ছি।
আগামীতে আর নির্বাচন করতে চান না জানিয়ে প্রভাবশালী এই আওয়ামী লীগ নেতা আরো বলেন, ১৯৯৯ সালে নিষিদ্ধ পল্লী পুর্নবাসন করেছি আল্লাহকে রাজি-খুশি করতে। ভালো কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই। হয়তোবা আগামীতে আর নির্বাচন করবো না। তবে আমার মা-বাবার মৃত্যুর পর আমার অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যদি আমাকে বলেন ছাড়তে, আমি ছাড়বো। ধরতে বললে ধরবো।
আগামী ২৭ জানুয়ারি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত জানতে নারায়ণগঞ্জে একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের কথাও জানান এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে ক্লাব করে সাংগঠনিক কাজগুলো করা হবে।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নেতারাসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
শিপন সিকদার/এসএম