চুয়াডাঙ্গা ও নিকলীতে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
চুয়াডাঙ্গায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমলো ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা গতকাল ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আজ সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে কিশোরগঞ্জের নিকলীতেও ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে আজ চুয়াডাঙ্গা ও নিকলীতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এদিকে তীব্র শীতে কাবু হয়ে হয়ে পড়েছে চুয়াডাঙ্গাবাসী। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। রাত থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে যান চলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন বিপাকে। ভোর থেকেই এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুভাস চন্দ্র সাহা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকদের বোরো ধানের বীজতলা ও আলুখেত রক্ষায় বিশেষভাবে সতর্ক করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেওয়া, সম্ভব হলে চারা রাতের বেলা ঢেকে দেওয়া, বীজতলায় সেচ দিয়ে পরদিন সকালে পানি বের করে দেওয়া এবং বীজতলা লাল হলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও লেনদেন অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেলা ১১টার আগে ক্রেতা ও গ্রাহকদের দেখা মিলছে না।
মিনারুল হক নামের এক দিনমজুর বলেন, প্রতিদিন ভোরে জেলা শহরে কাজের সন্ধানে আসতে হয়। আজকে মনে হচ্ছে তীব্র শীতে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। যেন বরফ পড়ছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। এ ছাড়া শীতে কাজ না পেয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে অনেককেই।
এদিকে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। গত সাত দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশুসহ প্রায় দুই হাজার রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আতাউর রহমান।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, তীব্র শীতে রোটাভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বেশির ভাগই শিশু রোগী। গত সাত দিনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশুসহ প্রায় দুই হাজার রোগী ঠান্ডাজনিত কারণে আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মো. রকিবুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত এক দিনের ব্যবধানে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আগামী ১৮ তারিখ পর্যন্ত ঘন কুয়াশার উপস্থিতি থাকতে পারে।
আফজালুল হক/এমজেইউ