শিম চাষে ৩ মাসে লাখ টাকা আয়

বেগুনি ফুলে ভরে গেছে চারপাশ। থোকায় থোকায় ধরেছে শিম। বান্দরবান সদর উপজেলায় এবার ৫১৩ হেক্টর জমিতে শিম চাষ করা হয়েছে। শিমের বাজারদর ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা।

সদর উপজেলার রেইসা ইউনিয়নের বাসিন্দা নাইনুচিং মারমা একজন গৃহিণী। এ বছর নিজের বাড়ির আঙ্গিনা ও চাষাবাদের জমিতে শিম চাষ করেছেন। শিমের বাজারদর ভালো থাকলেও তিনি তার জমিতে উৎপাদিত শিম পাড়া-প্রতিবেশীদের দিচ্ছেন বিনামূল্যে। যারা টাকা দিয়ে সবজি কিনে খেতে পারছে না তাদেরকে দিতে পেরে তিনিও আনন্দিত।

সদর উপজেলার গোয়ালিয়াখোলা এলাকার চাষি প্রফুল্ল কুমার তঞ্চঙ্গ্যা নিজের ৪০ শতক জমিতে শীতকালীন সবজি শিম চাষ করেছেন। ভালো ফলনের আশায় পরিচর্যা করছেন শিম গাছের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকেও পেয়েছেন সহযোগিতা। মৌসুমে শিম চাষাবাদ করে এরই মধ্যে তিনি ৫০ হাজার টাকা পাইকারী দরে বিক্রি করেছেন। অবশিষ্ট শিম বিক্রি করে আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাবেন বলে ধারণা করছেন তিনি।

তরুণ চাষি মো. ইকন। করোনাকালে পড়ালেখা ছেড়েছেন। দারিদ্র্যের কারণে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি তার। তাই আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বেছে নিয়েছেন কৃষিকে। ইকন নিজের পৈতৃক ১ একর জমিতে করেছেন শিম চাষ। ১ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছেন। পাইকারী ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে জেলার বিভিন্ন বাজার থেকে মহাজনরা এসে তার জমি থেকে শিম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

ইকন জানান, এক একর জমিতে শিম চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বিক্রি হবে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিন মাসে শিম চাষাবাদ ও বিক্রিতে তিনি লাখ টাকা উপার্জন করবেন। যা দিয়ে তার পরিবারের খরচ চলবে।

জানা গেছে, পাইকারি দরে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা। যা খুচরা বাজারে ৬৫-৭০ টাকা করে  বিক্রি হচ্ছে।

বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. হাসান আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, রবি মৌসুমে জেলার ৭টি উপজেলায় মোট ৫১৩ হেক্টর জমিতে শিম চাষাবাদ হয়েছে। তিন মাসে বিঘা প্রতি একজন কৃষকের চাষাবাদে উৎপাদন খরচ হয় ২৫-৩০ হাজার টাকা। ফলন উত্তোলনের পর ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত পাইকারী দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। এতে তিন মাসে একজন কৃষক বিঘা প্রতি ৭০-৮০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন। 

তিনি জানান, উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। বাজার দর ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখেও ফুটেছে। 

আরএআর