নির্বাচন নিয়ে উপকূলের মানুষের ভাবনা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হতে আর মাত্র দুইদিন বাকি। ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণার জন্য নির্ধারিত সময়ও শেষের দিকে। এখন শুধু অপেক্ষা ভোটের দিনের। আর সেই অপেক্ষার আর মাত্র একদিন। কিন্তু যাদের নিয়ে এত আয়োজন, সেই ভোটাররা রয়েছেন নানামুখী ভাবনায়।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের ত্রিমুখী চিন্তা ভাবনার কথা। কেউ বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে, কেউ বলছেন এটা কোনো নির্বাচনই না। আবার কেউ বলছেন সব দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন উৎসবমুখর হত। এরকম বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন উপকূলের সাধারণ ভোটাররা।
এদিকে ভোটের আগে ও ভোটের দিনের সমীকরণ নিয়ে ব্যস্ত প্রার্থীরা। তেমনিভাবে উত্তেজনাময় সময় কাটাচ্ছেন ভোটাররাও। কাকে ভোট দেবেন, কেন ভোট দেবেন, এসব নানা বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে পুরো নির্বাচনী এলাকা জুড়ে।
বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ভোটারদের একটি বড় অংশ তরুণ। যাদের বয়স ১৮ থেকে শুরু করে ৩০ বছরের মধ্যে। তরুণ ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশলে ভোট চেয়ে মাঠ চোষে বেড়াচ্ছেন।
কুয়াকাটার মেলাপাড়া গ্রামের ভোটার হারুনর রশীদ বলেন, আমার বাবাকে নৌকা মার্কায় কাজ করতে দেখেছি সারাজীবন। আমরাও সারাজীবন নৌকার সমর্থন করেছি। কিন্তু এ বছর নির্বাচনটা আমার কাছে বেশি একটা ভালো লাগছে না। কারণ এখানে সব দল অংশগ্রহণ করেনি, নির্বাচন বলতে আমি বুঝি সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন।
লতাচাপলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রহুল আমিন বলেন, অনেকে মনে করছে বিএনপি না আসায় নির্বাচন ভালো হবে না। কিন্তু আমি মনে করি, বিএনপি না আসায় নির্বাচন ভালো হবে। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল তারা জ্বালাও পোড়াও নৈরাজ্য করে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেয়। তাই আমি মনে করি, বিএনপি ছাড়াই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী, নৌকার প্রার্থী, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন।
কুয়াকাটার খাজুরা গ্রামের বাসিন্দা কদম আলী খন্দকার বলেন, গত দুই নির্বাচনে কোনো ভোট দিতে পারিনি। ভোট কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। এটি একতরফা নির্বাচন, বিএনপি অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতো।
এ বিষয় তরুণ সমাজসেবক ও কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, বর্তমান সরকার ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকা এবং বিগত নির্বাচনগুলো সাধারণ মানুষের কাছে শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বর্তমান সরকার। সেই জায়গা থেকে অধিকাংশ ভোটারদের কাছে তারা আস্থা হারিয়েছে।
এ ছাড়া পছন্দের প্রার্থী ও নির্বাচনী নানামুখী ভাবনা নিয়ে তরুণ, যুবক আর প্রবীণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের সবচেয়ে বড় চাওয়া হলো- ভোটের প্রক্রিয়াটি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়া। এ ছাড়া এলাকার উন্নয়নে প্রার্থীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন চান তারা।
এসএম আলমাস/এএএ