অপহরণের পর শ্যালিকার আত্মহত্যা, দুলাভাই কারাগারে
নীলফামারীর ডোমার থেকে অপহরণের ৯ দিন পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক কিশোরীর (১৬) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম ফুলুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে দুপুরে আশরাফুলসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে ডোমার থানায় মামলা করেন। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আশরাফুল ইসলাম ফুলু ডোমার উপজেলার বোটের পাড় (মেম্বার পাড়া) এলাকার মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে ওই কিশোরীর বড় বোনের সঙ্গে আশরাফুল ইসলামের পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। মা ওমানে অবস্থান করায় বড় বোন ও দুলাভাইয়ের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতো ওই কিশোরী। একসঙ্গে থাকার সুবাধে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে ফুঁসলিয়ে তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেন দুলাভাই আশরাফুল। এরপর গত ২৩ ডিসেম্বর ভোরে ওই কিশোরীর বড় বোন ফজরের নামাজ পড়তে উঠে দেখেন যে তার বোন শোয়ার ঘরে নেই। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে এ ঘটনার ৪-৫ দিন আগে আশরাফুল ঢাকায় কাজ করার কথা বলে বাড়ি থেকে চলে যান। ওই কিশোরীর পরিবারের অন্যান্য লোকজন খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারেন যে, আশরাফুল আসলে ঢাকায় না গিয়ে তার ভাই রবিউল ইসলাম ও হাচানুল ইসলামের সহায়তায় ২৩ ডিসেম্বর ভোর ৫টার দিকে ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। এরপর পরিবারের লোকজন আশরাফুলের ভাইদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও ফিরিয়ে দেননি আশরাফুল। এসব ঘটনা শুনে মেয়েটির মা ওমান থেকে গত ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে এসে যোগাযোগের চেষ্টা করলে আশরাফুলের নম্বরটি বন্ধ পান তিনি। এরপর ১ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে আশরাফুল মেয়েটির মামা শরিয়তকে ফোনে করে জানান যে, সে (ওই কিশোরী) বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে। তার মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
এ বিষয়ে ওই কিশোরীর মা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আশরাফুল ও তার ভাই মিলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে। আশরাফুল আমার মেয়ের সম্ভ্রমহানি করেছে এজন্য আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আশরাফুল ও তার ভাইয়েরা কৌশলে আমার মেয়ের মরদেহ রংপুর মেডিকেলে ফেলে পালিয়েছে।
ডোমার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামি আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
শরিফুল ইসলাম/আরএআর