ফরিদপুরে নৌকা প্রতীকের পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়ার অভিযোগ

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কে আজাদ নির্বাচন ভন্ডুল করার অপচেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ এনেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হক। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে শামীম হকের স্বাক্ষরিত বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ কে আজাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন এবং দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করার অপচেষ্টা করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, গত ১৯ ডিসেম্বর মামুদপুর, মোল্লা বাজার, বটতলায় ঈগল (এ কে আজাদের নির্বাচনী প্রতীক) প্রতীকের সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আসাদসহ তিন ভাইকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে, ২৫ ডিসেম্বর ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের কামরুল ও সেলিমের মাথায় এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ২৪ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের সন্ত্রাসী বাবু, বাবলু, বাইপাস সড়কে নৌকা প্রতীকের পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ভাবমূর্তি বিনষ্ট, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের এজেন্ট হিসেবে তার মালিকানাধীন মিডিয়ায় শামীম হকের নাগরিকত্ব বিভিন্ন যোগ্যতা নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে চলছে।
লিখিত বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন শামীম হক।
এক প্রশ্নের জবাবে শামীম হক বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার জন্য নির্বাচন করতেই হতো। নির্বাচনে উনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। নিজের ভরাডুবির শঙ্কায় তিনি নানা কূটকৌশল করে যাচ্ছেন।
শামীম হক বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসেছেন একে আজাদ। পাশাপাশি খন্দকার মোশাররফের সন্ত্রাসী বাহিনী ফারহান, মিনার, অনিক, শেখ মাহাতাব আলী, লোভী, মোকাররম বাবুকে দিয়ে সস্ত্রাসী কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আজাদ আমার ছোট ভাই। সে যখন আমার নাগরিত্ব নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সামনে প্রশ্ন তোলে তখন আমি বলেছিলাম এভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিয়ে আসো আমরা একসাথে নির্বাচন করি। তুমি নির্বাচিত হলে ফুলের মালা আমি তোমার গলায় পরিয়ে দেব। কিন্তু এ কে আজাদ তা না করে একের পর এক আমাকে আদালতে টেনে নিয়ে গেছে। এতে আমার সময় ক্ষেপণ হয়েছে। পরে সুপ্রিম কোর্টের রায় আমার পক্ষে আসার পর গণজাগরণ দেখে ভয় পেয়ে গেছে একে আজাদ। তাছাড়া আওয়ামী লীগের পদধারী, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মুক্তিযোদ্ধারা সবাই আমার পক্ষে। এ অবস্থায় মানুষ ভুল করতে পারে না, তারা উন্নয়নের স্বার্থে উন্নয়নের পক্ষে উন্নয়নের জন্য নৌকায় ভোট দেবেন।
ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, শ্রমিক লীগের সভাপতি গোলাম নাসির, কাউন্সিলর মোবাররক খলিফা, আলীয়াবাদ ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন সন্ত্রাস করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এ কে আজাদের। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে শামীম হক বলেন, শহীদুল সন্ত্রাসী হলে বার বার নির্বাচিত হয় কেন, মোবাররক খলিফা নির্বাচিত কাউন্সিলর, গোলাম নাসির এবং তোফাজ্জেল হোসেন একজন বড় সংগঠক। তারা থাকলে এ কে আজাদ জিততে পারবেন না, কেননা এলাকায় তারা জনপ্রিয় এবং তাদের ভোট আছে এ জন্য তাদের চরিত্র হননের জন্য এসব কথা বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি আমার কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি যাতে তারা শান্ত থাকে। আমি চাইলে উনাকে (এ কে আজাদ) মাঠে নামতে দিতাম না। কিন্তু আমি গণতন্ত্রের প্রতি সহনশীল, পরমতের প্রতি আস্থাশীল।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শ্যামল ব্যানার্জী, মাসুদুল হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল আহাদ ওরফে সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সামসুল বারী, পৌর আওয়ামী লীগের একাংশের আহ্বায়ক সাহিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জহির হোসেন/আরএআর