পাবনায় আ.লীগের কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ
ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণকে কেন্দ্র করে পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এ সময় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের কিছু আলামত ও তিন রাউন্ড শর্টগানের গুলি উদ্ধার করেছে। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরের পিআরপুর মোড় বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সরকার ও নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণ করতে না দেওয়ায় তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছে। এতে পুরো এলাকাজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী পিআরপুর এলাকায় সরকার পতন ও নির্বাচন বর্জন বিষয়ক লিফলেট বিতরণ করছিল। একপর্যায়ে তারা ওই এলাকায় থাকা ঈশ্বরদী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছান। এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে কয়েকজন বের হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওই এলাকা ছাড়তে বলেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখান থেকে চলে যান।
এর কিছুক্ষণ পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে ৩০ থেকে ৪০ জন যুবক দলীয় কার্যালয়ের সামনে আসেন। তারা কার্যালয় লক্ষ্য করে তিন রাউন্ড গুলি ও তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি আবির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। গুলি ছোড়া যুবকেরা তাকে চড়থাপ্পড় দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রকনুজ্জামানের দাবি, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সরকার ও নির্বাচন বিরোধী লিফলেট বিতরণ করতে নিষেধ করা হয়েছিল। এর প্রতিশোধ নিতেই তারা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের খুঁজে বেড় করে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।
পাবনা জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক জহুরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করতে গিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন বাধা দেয়। পরে বিএনপির লোকজন ঘটনাস্থল থেকে চলে আসে। পরে একটি নাটক সাজানোর জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন নিজেরাই গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এখন এটিকে ভিন্নদিকে নিতে বিএনপির উপর দোষ চাপানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক তদন্ত মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে লিফটেল বিতরণ নিয়ে বিরোধের কারণে বিএনপি কর্মীরা ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এখনো কারো নাম ঠিকানা জানা যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
রাকিব হাসনাত/আরএআর