ভোটের ব্যস্ততা নেই ছাপাখানা-প্রিন্টিং প্রেস-মাইকের দোকানগুলোতে
রাজশাহীতে নির্বাচনের মাইক ভাড়া দেয় বাংলাদেশ মাইক সার্ভিস নামের একটি দোকান। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সেই দোকানের মালিক ওয়াহিদুর রহমান রুমেল। তবে এবারের দ্বাদশ নির্বাচনে হতাশ হতে হয়েছে তাকে। তেমন কোনো অর্ডার নেই। তাই শেষ বিকেলে রাজশাহী নগরীর আলুপট্টির দোকানে বসে একা একা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটাচ্ছেন।
রুমেলের মতোই অলস সময় কাটছে রাজশাহীর ছাপাখানা, ডিজিটাল প্রিটিং প্রেসগুলোর মালিক ও কর্মচারীদের।
রুমেলের দাবি, রাজশাহীর মধ্যে পুরানো সাউন্ড সিস্টেমের দোকানটি তার। নির্বাচন অথবা উৎসব সব অনুষ্ঠানে সাউন্ড সিস্টেমের কাজ পেয়ে থাকেন তারা। গেল রাজশাহী সিটি কর্পোরেশেনের নির্বাচনের সময়ে কাজের তুলনায় চারভাগের একভাগও কাজ পাননি তারা। তার দাবি পুরো রাজশাহীর একই চিত্র।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত দুই সপ্তাহ আগে থেকে সাউন্ড সিস্টেমের মাইকগুলো প্রস্তুত করা হয়। যেগুলোর ছোটখাট সমস্যা ছিল, সেগুলো ঠিক করেছি। সব মিলে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্তুতি অনেক ভালো ছিল। কিন্তু সেইভাবে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বা আগের নির্বাচনগুলোতে মাইকিংয়ের জন্য অনেক প্রার্থী আগেই ভাড়া নিয়েছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু সেইভাবে সাড়া পাচ্ছি না। আশা করছি আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে অর্ডার বাড়তে পারে।
জানা গেছে, প্রতীক বরাদ্দের তৃতীয় দিনেও ব্যস্ততা বাড়েনি ছাপাখানা, ডিজিটাল প্রিটিং প্রেস ও সাউন্ড সিস্টেমের (মাইক) দোকানগুলোতে। ফলে গতানুগতিক কাজগুলো করছেন তারা। যদিও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আগাম প্রস্তুতি ছিল তাদের। তবে প্রত্যাশা মতো সারা না পাওয়ায় হতাশ বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমনি রাজশাহী নগরীর কয়েকটি ছাপাখানা, ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস ও সাউন্ড সিস্টেমের (মাইক) দোকানগুলো গিয়ে দেখা গেছে কাজের চাপ নেয় তাদের। তারা বলেছেন, নির্বাচনের কাজ নেই বললেই চলে। যে কাজগুলো আসছে, তা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। যদিও তাদের প্রস্তুতি ছিল ভালো। প্রস্তুতি মাফিক তারা কাজ পাচ্ছে না বলে দাবি করেন।
একই অবস্থা ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেসগুলোতে সেখানেও কাজ নেই। নগরী সাহেব বাজারের অ্যাকটিভ ডিজিটাল সাইনের প্রোপ্রাইটর ইব্রাহিম হোসেন বাবু বলেন, কাজ নেই বললেই চলে। দুইজন প্রার্থীর ছোট ব্যানারের কাজ করেছি। সিটি নির্বাচনের চার ভাগের একভাগও কাজ নেই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৫ হাজার ফ্রেম বানিয়েছিলাম। সেখানে মাত্র ৪ হাজার ফ্রেম বিক্রি হয়েছে। বাকিগুলো পড়ে আছে।
শুধু তাই নয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেড়েছে পিভিসি রোলের দাম। প্রতি রোলে বেড়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। রঙয়ের দামও বেড়েছে। প্রতি লিটারে বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। যেহেতু নির্বাচনের ১৫ থেকে ১৬ দিন। আশা করছি কাজ বাড়তে পারে।
রংধনু অফসেট প্রিন্টিং প্রেসের প্রোপ্রাইটর তাজউল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের কাজের তেমন অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। রাজশাহী-৩ আসনের এক প্রার্থীর হ্যান্ড পোস্টার ছাপানের কাজ করেছি। আশা করছি আরও দুই থেকে তিন দিন পরে কাজের চাপ বাড়তে পারে।
শাহিনুল আশিক/আরকে