মারুফা আক্তারকে জেলা আ.লীগ থেকে অব্যাহতি
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী মারুফা আক্তার পপিকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দের সই করা এক বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে অব্যাহতির চিঠিতে দেখা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর মারুফ আক্তার পপিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২০ নভেম্বর মির্জা আজম অডিটরিয়ামে জামালপুর-৫ আসনের এমপি প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের মতবিনিময় সভায় মারুফা আক্তার পপির অসৌজন্যমূলক আচরণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দ হতবাক হন। তার ওইদিনের আচরণ দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী বলে তার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি ওই ব্যাখ্যার কোনো জবাব দেননি। যা জেলা আওয়ামী লীগকে অবজ্ঞা ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। তাছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এবং তার মৃত বাবা ও পরিবারকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসত্য, কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন বক্তব্য ভাইরাল করেন। এতে জামালপুর আওয়ামী লীগ পরিবারের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তাই জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মারুফা আক্তার পপিকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তিটি গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মারুফা আক্তার পপি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি এ বিষয়ের কোনো চিঠি পাইনি। এ ছাড়া এই চিঠি নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথাও নেই।
উল্লেখ্য, ২০ নভেম্বর জামালপুর শহরের মির্জা আজম মিলনায়তনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি মতবিনিময় সভা হয়। এতে জামালপুর-৫ (সদর) আসনে দলের প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদকে পরিচয় করিয়ে দেন সভার প্রধান অতিথি মির্জা আজম। সভায় নেতাদের বক্তব্য শেষে মারুফা আক্তার পপি দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে চাইলে সে সময় মির্জা আজম তাকে বসতে বলেন। কয়েকবার বসার জন্য বললেও তিনি স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় মির্জা আজম তাকে ধমক দেন। এই ঘটনার পর মারুফা আক্তার পপি বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এই ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নেত্রী মারুফা আক্তার পপি তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, পাথর গলানো স্পর্শ: আমার মেয়ে মাদিবা ময়ানী, ২ দিন যাবৎ লক্ষ্য করছি, আমার প্রতি ওর আচরণ খুবই সংবেদনশীল, ঘুম থেকে জেগেই আমার গলা জড়িয়ে ধরছে, ও কিছু খাবার সময় একটু খাও বলে জোর করে আমার মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে, কখনো পেছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলছে ‘আমার মা..! আমার মা....
আজকে স্কুলে যাওয়ার পথে জিজ্ঞেসই করে ফেলল-‘মা, ওই লোকটা তোমাকে এমন করে ধমকাচ্ছিল কেন?’ আমি কিছুক্ষণ ওর দিকে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলাম, হেরে গেলাম ওর কাছে, চোখে পানি চলে এল নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না! বললাম, ভালো মানুষগুলো আমাকে ভালোবাসে তো এটা হয়তো অনেকের সহ্য হয় না...
রকিব হাসান নয়ন/এমজেইউ