আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এমপি বকুলের সম্পদ
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে প্রথমবারের মতো ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শহিদুল ইসলাম বকুল। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে গত ৫ বছরের আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এমপি বকুলের সম্পদ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বকুল।
নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা এবারের হলফনামায় বকুলের বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ৭ লাখ ৫৪৮ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় আয় দেখিয়েছিলেন ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে বকুলের আয় বেড়েছে ৩৯ গুণ। আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বকুলের সম্পদও।
২০১৮ সালের হলফনামায় বকুলের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তার এবারের হলফনামায় বকুলের উল্লেখিত মোট সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৪১ লাখ ৭৪ হাজার ৬২৬ টাকা। যা বিগত সময়ের থেকে প্রায় ২৪ গুণ বেড়েছে।
আয় এবং সম্পদ বাড়লেও ঋণী হয়েছেন বকুল। ২০১৮ সালের হলফনামায় বকুলের ঋণ না থাকলেও এবার তার ঋণের পরিমাণ ৫৮ লাখ ২১ হাজার ৪০ টাকা। যার ভেতর মধুমতি ব্যাংক গুলশান শাখা থেকে ১৮ লাখ ২১ হাজার ৪০ টাকা এবং ব্যক্তিগত ঋণ ৪০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন তিনি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে বকুলের দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বকুলের স্ত্রীর বাৎসরিক আয় ছিল ৩ লাখ টাকা। এবার যা বেড়ে হয়েছে ১০ লাখ ৭ হাজার ১৫৫ টাকা। যার ভেতর ৯ লাখ ৫ হাজার ৩৩০ টাকা ব্যবসা থেকে আয় করেন বকুলের স্ত্রী। ২০১৮ সালে বকুলের অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ছিল নগদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা, ভাইয়ের দেওয়া একটি মাইক্রোবাস এবং ৬ লাখ টাকা মূল্যের ২০ ভরি স্বর্ণ। স্থাবর সম্পদ হিসেবে বকুলের নামে ছিল পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৮ বিঘা কৃষি জমি, ৬ শতাংশ অকৃষি জমি এবং ৩ রুম বিশিষ্ট আধাপাকা বাড়ি।
২০২৩ সালের হলফনামায় বকুল জানিয়েছেন তার কাছে নগদ টাকা আছে ৬০ লাখ ৮৫ হাজার ৬০০ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২৮ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৬ টাকা, কোম্পানিতে (বন্ড ও স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত নয় এমন) শেয়ার ৫ লাখ টাকা, স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭০ টাকা, ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ২টি জিপ ও ২০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে। স্থাবর সম্পদে বকুলের শুধু ০.৭৮৪ শতাংশ ভূমি এবং ৩৫.০৭০ বর্গফুট আয়তনের চারতলা দুটি দালানের ২/৩২ অংশ যুক্ত হয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসন থেকে ১৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। যার মধ্যে ৯ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁইয়া। বৈধ প্রার্থীরা হলেন- শহিদুল ইসলাম বকুল (আওয়ামী লীগ), আবুল কালাম আজাদ (স্বতন্ত্র), শামীম আহমেদ সাগর, কাজল রায়, ইব্রাহিম খলিল, জামাল উদ্দীন ফারুক, আনিসুর রহমান, আশিক হোসেন ও লিয়াকত আলী।
বাদ পড়েছেন- মোয়াজ্জেম হোসেন (জাসদ), হুমায়ুন কবির (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র), এসকেন আলী (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র), কর্নেল (অব.) রমজান আলী (আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র) ও সায়েদুল হক (স্বতন্ত্র)।
গোলাম রাব্বানী/আরকে