১৮ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করল পুলিশ
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে লোগাং এর অনিল কারবারী এলাকায় ইউপিডিএফের চার নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরো ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। দীর্ঘদিন পর পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে আবারো আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। জেলার পানছড়িতে ছাত্র সমাবেশকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে দশটার দিকে পানছড়ি উপজেলার লৌগাং ইউনিয়নের অনিল পাড়ায় অতুল চন্দ্র চাকমার বাড়িতে রাত যাপনকারী ইউপিডিএফ নেতাকর্মীদের লক্ষ্যকরে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। পরে মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পৌঁছায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন, গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানছড়ি উপজেলার লৌগাং করল্যাছড়ি এলাকার বাসিন্দা বিপুল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বড়নাল ইউনিয়নের সুরেন্দ্র রওয়াজা হেডম্যান পাড়া এলাকার সুনীল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সহ-সভাপতি ও ধ্রনচার্য কার্বারি পাড়ার লিটন চাকমা এবং ইউপিডিএফ সদস্য উল্টাছড়ি ইউনিয়নের পৌদ্দিনি পাড়ার রুহিন বিকাশ ত্রিপুরা। ২০১৮ সালের স্বনির্ভর হত্যাকাণ্ডের পর এ হামলায় সবচেয়ে বেশী হতাহত হয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের চূড়ায় একটি বাগানবাড়ির প্রবেশমুখে কিছু ইটের টুকরোর স্তুপের ওপর পরে আছে পিছমোড়া করে হাত বাঁধা রক্তাত একটি মরদেহ। টিনশেট বিল্ডিং বাড়িটির ঘরের ভেতর প্রবেশ করে দেখা গেছে মেঝেতে পরে আছে আরো দুটি গুলিবিদ্ধ মরদেহ। ঘরের পেছনের সাইটে লিচু গাছের তলায় পড়ে রয়েছে আরো একজনের মরদেহ।
পাানছড়ি চেঙ্গি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনন্দ জয় চাকমা জানান, রাত পৌনে দশটার দিকে গোলাগুলির শব্দ পেয়েছেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাহতের ঘটনা জেনে প্রশাসনকে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
লৌগাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জয় কুমার চাকমা জানান, রাতে সশস্ত্র কিছু লোকজন ঘরটিকে ঘিরে ফেলে। ঘরের ভেতর থাকা চারজনকে গুলি করে হত্যা করে, আরো তিন জনকে ধরে নিয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক অবস্থা বিরাজ করছে।
ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ মারমা এমন নৃশংস ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। নিতি দত্ত চাকমা এবং হরি কমল ত্রিপুরা নামে দুইজন ইউপিডিএফ নেতাকে ঘটনাস্থল থেকে ধরে নিয়ে গেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ঘটনাকে নিজেদের দলীয় অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে জানিয়েছেন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আজম জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের থেকে ৪ জন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছেন। দুর্গম এলাকা হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সময় লাগছে বলেও জানান তিনি।
এ ঘটনায় আগামী ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলাব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডাক দিয়েছে ইউপিডিএফ। এছাড়াও আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে একমাস পানছড়ি বাজার বয়কট করার ঘোষণা করেছে দলটি।
এসএম