রাতারাতি পেঁয়াজ-শূন্য বরিশালের সবচেয়ে বড় আড়ত
ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই বরিশালে পেঁয়াজের দাম এক লাফে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে গেছে। ভোর থেকেই হঠাৎ করে পেঁয়াজশূন্য হয়ে পড়েছে নগরীর সবচেয়ে বড় পাইকারি পেঁয়াজের বাজার পেঁয়াজ পট্টি। ৩২টি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পেঁয়াজ নেই। দু-একটিতে পাওয়া গেলেও পাইকারি দামই তার বেশি রাখা হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বেশি লাভ আদায় করতে বাজার থেকে পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। খুচরা দোকানে দেখা গেছে, ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এক কেজি পেঁয়াজ।
রূপাতলীর মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক তাভিরুল ইসলাম বলেন, গতকালও পেঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকা কেজিতে পাইকারি ছিল। আজকে পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। এজন্য পেঁয়াজ নিচ্ছি না। এই দামে পেঁয়াজ নিলে কম হলেও ২০০ টাকায় আমাকে বিক্রি করতে হবে।
বাংলাবাজার এলাকার আরেক দত্ত বাণিজ্যালয়ের অয়ন দত্ত বলেন, ক্রেতারা এসে ২০০ টাকা পেঁয়াজের দাম দেখে অনেকেই ফিরে গেছেন। কিন্তু আমাদের তো কিছুই করার নেই। চড়া দামে কিনে তো আর কম দামে বিক্রি করতে পারি না।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বরিশালের পেঁয়াজের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে এলসি সাইজের পেঁয়াজ পাইকারি ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে দাম এখন ২০০ টাকা।
আড়তদাররা বলছেন, তারা প্রতিদিন ১৫০-২০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি করতেন। সেখানে পেঁয়াজ সরবরাহ না থাকায় বিক্রি বন্ধ করতে হচ্ছে তাদের। শুক্রবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে পেঁয়াজ সরবারহকারীরা গাড়ি নিয়ে আসছে না। এজন্য পেঁয়াজের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান
পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে উচ্চমূল্যে বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়ায় দুপুরে পাইকারি বাজার পেঁয়াজ পট্টিতে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়। এ সময় উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, আজকে ৬টি পাইকারি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে উচ্চ মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি করছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেসার্স একতা ট্রেডার্সকে ৩০ হাজার, মেসার্স রহমত ভান্ডারকে ১০ হাজার, জমজম বানিজ্যালয়কে ১০ হাজার, নগরীর হাটখোলা এলাকার মেসার্স নিউ আদর্শ বানিজ্যালয়কে ২৫ হাজার, এলাহি বানিজ্যালয়কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএএ