পুলিশ কর্মকর্তার উদারতা
একটি ভ্যানগাড়ি ছিল সাইফুল ইসলামের (৩৭) সম্বল। তাও সেটি কিস্তিতে কেনা। মাস খানেক আগে ওই ভ্যানগাড়িটি তার বাসার পাশ থেকে খোয়া যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েন তিনি। অনেকটা খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করতে থাকেন সাইফুল।
অপরদিকে আড়ৎদারের কাছ থেকে ধার করে নেওয়া সবজি ভ্যানে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে বিক্রি করে আড়ৎদারের বিল মিটিয়ে যা আয় হতো, তা দিয়ে চলত তার সংসার।
এ ছাড়া এনজিও থেকে নেওয়া কিস্তির চাপ সামলাতে না পেয়ে পালিয়ে থাকতে হতো তাকে। পরে থানায় মৌখিকভাবে ভ্যান উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গাজীপুরের বাসন থানা পুলিশকে অনুরোধ করেন তিনি।
পরে মঙ্গলবার দুপুরে ভ্যানচালকের এমন অসহায়ত্বের কথা শুনে তাৎক্ষণিক একটি ভ্যানগাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক। ভ্যান পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন সবজি বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম।
সাইফুল ইসলাম জানান, গাজীপুর মহানগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার নায়েব বাড়িতে থেকে এলাকায় সবজি বিক্রি করেন তিনি। পাঁচ সদস্যের পরিবারে তিনি একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। খেয়ে না খেয়ে ধারদেনা করে সম্প্রতি কিস্তিতে একটি পুরোনো ভ্যান কেনেন তিনি।
তিনি আরও জানান, সারাদিন সবজি বিক্রি করে যে আয় হয় তা থেকে তিনি কোনোরকমে সংসারের খরচ মেটান এবং কিস্তির টাকা পরিশোধ করতেন। কিন্তু এক মাস আগে তার ভ্যানটি বাসার পাশ থেকে খোয়া যায়। এতে করোনাকালে তিনি অনেকটাই কর্মহীন হয়ে চরম হতাশার মধ্যে পড়েন।
বিষয়টি বাসন থানার ওসির কাছে জানালে তিনি মঙ্গলবার একটি ভ্যান গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন। সাইফুল বলেন, পুলিশের এমন উদারতা দেখে পুলিশ সম্পর্কে খারাপ ধারণা পাল্টে গেছে। ভ্যানটি আমাকে নতুনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে। পুলিশে এখনও ভালো কর্মকর্তা রয়েছেন।
বাসন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক বলেন, তার পরিবারের অবস্থা দেখে ও মানবিক দিক বিবেচনায় সাইফুল ইসলামকে একটি ভ্যানগাড়ি কিনে দিয়েছি। যাতে করোনাকালে তার সংসার চালানো সহজ হয়।
শিহাব খান/এমএসআর