পাবনার একটিতে চমক, ৪টিতে পুরোনোরাই হলেন নৌকার মাঝি
সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাবনার ৫টি আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ৫ আসনের মধ্যে একটিতে নতুন এবং বাকি ৪টিতে বর্তমান সাংসদদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশের সঙ্গে পাবনার ৫টি আসনের দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
পাবনার ৫টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মোট ৭৩ জন দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। যাচাই-বাছাই শেষে বর্তমান ৫ এমপিকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মনোনয়ন প্রাপ্তরা হলেন- পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার একাংশ) আসনে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি, পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আহমেদ ফিরোজ কবির এমপি, পাবনা-৩ (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মকবুল হোসেন এমপি, পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গালিবুর রহমান শরীফ গালিব এবং পাবনা-৫ (সদর) আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি।
মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণার পরপরই পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে আনন্দ মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় গিয়ে শেষ হয়। এসময় পথচারীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে জেতাতে মাঠে কাজ করতে হবে।
শামসুল হক টুকু
তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বেড়ার বৃশালিখা গ্রামের সন্তান টুকু ব্যবসায় বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি একসময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট তিনি ১১ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
আহমেদ ফিরোজ কবির
তিনি সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়ার সন্তান। সুজানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়াম্যান। তিনি সাবেক এমপি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম আহমেদ তফিজ উদ্দিনের জ্যেষ্ঠ পুত্র। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে স্নাতক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৯ সালে তিনি সুজানগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে অংশগ্রহণ করে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হোন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
মকবুল হোসেন
কৃষি ও ব্যবসার সাথে জড়িত মকবুল হোসেন ১৯৮৬ সালে ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি পাবনা-৩ আসনে অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। পরবর্তীতে তিনি ৯ম, ১০ম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। তিনি ভাঙ্গুড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
গালিবুর রহমান শরীফ গালিব
তিনি পাবনা-৪ আসনের ৫ বারের সংসদ সদস্য সাবেক ভূমিমন্ত্রী প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ছেলে। বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।
গোলাম ফারুক প্রিন্স
সাবেক ছাত্র ও যুবলীগ নেতা গোলাম ফারুক প্রিন্স পাবনা শহরের কৃষ্ণপুরের বাসিন্দা। ২০০৮ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হোন। এরপর ১০ম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। বর্তমানে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
রাকিব হাসনাত/আরকে