ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছয় আসনে আ.লীগের প্রার্থী হতে চান ৬০ জন
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ছয়টি আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান ৬০ জন প্রার্থী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নৌকার মাঝি হতে সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে। এই দুই আসনে সর্বোচ্চ ১৩ জন করে দলের মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। অন্যান্য আসনের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া এবং কসবা) আসনে সাতজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে ১২ জন মনোনয়ন চেয়েছেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে মনোনয়ন চেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এম এ করিম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা এ কে এম আলমগীর, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা নাজির মিয়া ও তার স্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মোছাম্মৎ রোমা আক্তার, ফান্দাউক ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফারুকুজ্জামান ফারুক, আওয়ামী প্রজন্মলীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মো. ইখতেশামুল কামাল, প্রভাষক ইমরান হাই জাবেদ, কৃষক লীগ নেতা আদেশ চন্দ্র দেব, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ নেতা অ্যাডভোকেট রাকেশ চন্দ্র সরকার, যুব মহিলা লীগ নেত্রী বিউটি কানিজ ও গুনিয়াউক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ইব্রাহিম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সদ্য উপ-নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মাইনুদ্দিন মঈন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল হান্নান রতন, কামরুজ্জামান আনসারী, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডাক্তার আশীষ কুমার চক্রবর্তী, সরাইল আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, আশুগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতি ছফিউল্লাহ মিয়া, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান, সরাইল যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু, জাপান যুবলীগ নেতা আবু শামীম পিয়ার পলাশ, সরাইল ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. জালাল মিয়া মনোনয়ন চেয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের জন্য মনোনয়ন চেয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলিও এবং সুইডেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী পরিষদ নেতা জহিরুল হক চৌধুরী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলম, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য এ কে এম বদিউল আলম জামাল, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি, জেলা যুবলীগ নেতা রাশিদুর রেজা তসলিম, কসবা যুবলীগের সাবেক নেতা হাজী মো. লুৎফুর রহমান দলের মনোনয়ন প্রার্থী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের মনোনয়ন প্রার্থীরা হচ্ছেন- বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল, সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, বঙ্গবন্ধু ব্যারিস্টারস কাউন্সিল সভাপতি ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া নবী, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা মো. আলামিনুল হক, নবীনগর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী অধ্যাপক নূরুন্নাহার বেগম, আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. কবির আহমেদ ভূঁইয়া, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু আব্বাস ভূঁইয়া, আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদ আলম, হকি ফেডারেশনের সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ নেতা একেএম মমিনুল হক সাইদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ নেতা মো. মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, বাঞ্ছারামপুর আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা একেএম আবুল খায়ের দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. রফিকুল ইসলাম আবুল ও অ্যাডভোকেট দিদার হোসেন রেজভী, বাঞ্ছারামপুর আওয়ামী লীগ নেতা সাঈদ আহমেদ বাবু, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান বাদল ও মো. গোলাম মোস্তফা কামাল, ঢাকার বাড্ডা আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জামান ধীরন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডাক্তার এ কে মাহবুবুল হক দলের মনোনয়ন চেয়েছেন।
অন্যান্য দলের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে ইসলামী ফ্রন্টের একজন এবং বাসদের একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে তৃণমূল বিএনপির একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনে জাসদের দুইজন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ ও ৬ আসনে স্বতন্ত্র একজন করে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার তৃণমূল বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। তবে বাবার মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে অংশ নিতে ও নৌকার টিকিট নিতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন এই সাবেক এমপিপুত্র। কিন্তু সেই উপ-নির্বাচনে নৌকার টিকিট পেয়েছিলেন শাহজাহান আলম সাজু। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম না কিনে তৃণমূল বিএনপি থেকে মনোনয়ন ফরম কেনায় বিষয়টি নিয়ে বেশ সমালোচিত তিনি। তবে কেউ কেউ আবার বলছেন বিষয়টি দাড়িয়েছে ঘরের ছেলে ঘরে ফেরার মতো।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
এমজেইউ