পঞ্চগড়ে সন্ধ্যা হলেই নামছে শীত
হিমালয় কন্যাখ্যাত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে হিমেল হাওয়ার পরশ নিয়ে নামছে শীত। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতের প্রকোপ। বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায়।
বুধবার ভোরে দেখা যায়, হালকা কুয়াশার চাদরে জড়িয়েছে প্রকৃতি। কুয়াশায় ঝরা শিশিরে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। সন্ধ্যা নামতেই বাড়তে থাকে শীতের আবহ। তাই শীতের পোশাকের চাহিদা বাড়ছে জেলায়। যার প্রভাব পড়েছে কেনাকাটায়।
স্থানীয়রা জানান, শীতের আমেজ শুরু হয় অক্টোবরের শেষ দিকে। উত্তরের এ জেলায় সাধারণত নভেম্বরের শুরু থেকে বাড়তে থাকে শীতের পরশ। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই শীত নামতে দেখা যায়।
শীত ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন ধানে কৃষকের ঘরে নবান্নের আনন্দ। গোলার নতুন ধানে মৌ মৌ গন্ধের পাশাপাশি শুরু হয়েছে পিঠা-পুলির উৎসব। জেলা শহরসহ গ্রামীণ জনপদের হাট-বাজারগুলোতে বিকেল হলেই শীতের গরম হরেক রকমের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানিরা। গরম পিঠার ধোয়াসহ খেতে ফুটপাতের এসব দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ভোজন রসিকেরা।
শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ-তোশকের কারিগররা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের কর্মচাঞ্চলে তৈরি হচ্ছে লেপ তোশক। দোকানগুলোতে হরেক রকমের কাপড় ও তুলার পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। কারিগররা তুলা ধোনা আর লেপ তোশক সেলাইয়ের কাজে মগ্ন।
হাটবাজারে উঠছে শীতের তরতাজা শাকসবজি। ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, লাউ, মুলা, কাঁচা টমেটো, শিম, পেঁয়াজপাতা, ধনিয়া পাতা, শালগমসহ বিভিন্ন শীতকালীন শাক-সবজি পাওয়া যাচ্ছে। তবে এবার শাক-সবজিতে চড়া দামের কারণে ক্রেতারা বিপাকে। তারপরেও সাধ্যের মধ্যে কিনছেন নতুন সবজি।
আরও পড়ুন
শীতের পরশ বাড়ার সঙ্গে জেলা শহরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে বসতে দেখা গেছে ফুটপাতে কাপড়ের দোকান। উচ্চ, মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন শপিং মল ও মার্কেটগুলোতে গরমের পোশাক কিনতে পারলেও নিম্নবিত্তদের ভরসা এসব ফুটপাতের কাপড়ের দোকান। সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার, ট্রাউজার, টুপিসহ বিভিন্ন রকমের শীতের কাপড় উঠে এসব দোকানগুলোতে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ বলেন, এ অঞ্চলটি হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের নিকটবর্তী হওয়ায় এখানে শীতের আগমন কিছুটা আগেই ঘটে। বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৯টায় রেকর্ড হয়েছে ১৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর ৬টায় রেকর্ড হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এখন পর্যন্ত ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা নামেনি বলে জানান তিনি।
এসকে দোয়েল/এএএ