৫০ বছর ইমামতি শেষে ঘোড়ার গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন ইমাম
চাকরির শেষ দিনে রাজকীয় সংবর্ধনা নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়ি ফিরেছেন মাওলানা আব্দুর রব (৭৫) নামে এক মসজিদের ইমাম। তিনি কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার মনোহরগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম ছিলেন এবং উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে জুম্মার নামাজের পর তার বিদায় উপলক্ষ্যে এ আয়োজন করেন মুসল্লিরা।
স্থানীয়রা জানান, মাওলানা আব্দুর রব ১৯৭৩ সালে মনোহরগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন। ওই মসজিদে ৫০ বছর ইমামতি করার পর চাকরির শেষ দিনে মসজিদের মুসল্লিরা তার রাজকীয় বিদায়ের আয়োজন করেন।
প্রিয় ইমামের বিদায়ে মসজিদের প্রবেশ পথ ও আশপাশের এলাকা সাজানো হয় রঙিন আলোকসজ্জায়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধনার পাশাপাশি দেওয়া হয় ৫ লাখ টাকার চেক। এছাড়াও বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় ঘোড়ার গাড়িতে করে। এদিন মনোহরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ডুমুরিয়া গ্রাম পর্যন্ত মুসল্লিদের লম্বা বহর ছিল। এসময় আশপাশের অন্যান্য ৩০ জন ইমামকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই হুজুর আমাদের মসজিদে ইমামতি করতেন। আমরা অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। হুজুরের শারীরিক বার্ধক্যের কারণে বিদায় দিতে হয়েছে, না হয় আরও রেখে দিতাম। আমরা চেষ্টা করেছি হুজুর দীর্ঘদিন ইমামতি করায় যথাযথ সম্মান জানাতে।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রব বলেন, আমি ৪২ বছর একটি স্কুলে ধর্ম বিষয়ে শিক্ষকতা করেছি। বয়স যখন ২৫ তখন মনোহরগঞ্জ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করি। ৪০ টাকা বেতন পেতাম শুরুতে। সবশেষে ২০ হাজার টাকা।
দেখতে দেখতে ৫০ বছর কেটে গেল। আমার ১২ সন্তানকে লেখাপড়া করিয়েছি। তারা সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত। চেষ্টা করেছি আল্লাহ-রাসুলের বাণী মুসল্লিদের সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়ার। জানি না কতটুকু পেরেছি। চাকরির শেষ দিনে আমাকে মুসল্লিরা যে সম্মান দেখিয়েছেন, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে আমি দোয়া করি যেন সবাইকে তিনি সম্মানিত করেন।
আরিফ আজগর/এমএএস