এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলের মৃত্যু দুর্ঘটনাবশত, ধারণা পুলিশের
প্রখ্যাত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের ছেলে এটিএম খালেকুজ্জামানের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুলাদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান। তিনি জানান, মরদেহ নিতে এটিএম খালেকুজ্জামানের দুই ভগ্নিপতি এসেছিলেন। তারা এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ করেননি। পরবর্তীতেও অভিযোগ করতে পারবেন। তবে পরিবারেরও ধারণা দুর্ঘটনাবশত মৃত্যু হয়েছে।
ওসি বলেন, এটিএম খালেকুজ্জামান একা থাকতেন। তিনি বিয়ে করেননি। স্বজনদের মধ্যে শুধুমাত্র মায়ের সাথে যোগাযোগ ছিল। মরদেহ উদ্ধারের পর তার শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়নি। মোবাইল, জাতীয় পরিচয়পত্র সবকিছুই পকেটে পাওয়া গেছে।
নিহতের স্বজন জিয়াউদ্দিন জুয়েল জানিয়েছেন, মরদেহ বুঝে পেয়ে ঢাকায় ফিরছেন। দাফন শেষে পরিবারের সাথে আলাপ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বরিশালের পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, খুলনা যাওয়ার জন্য ঢাকার বাসা থেকে বের হলেও তার মরদেহ পাওয়া গেছে বরিশালের নদীতে। তার মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে খালেকুজ্জামানের সর্বশেষ অবস্থানসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখব। কোনো অসঙ্গতিমূলক কিছু পেলে এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে অবশ্যই পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে ঢাকার আশপাশের কোথাও মৃত্যু হয়েছে তার। মরদেহটি ভাসতে ভাসতে মুলাদীর জয়ন্তী নদীতে এসেছে।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেফায়েতুল ইসলাম জানিয়েছেন, অর্ধগলিত থাকায় মরদেহের শরীরের তেমন কোথায় আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করা যায়নি, তবে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কোনো অসঙ্গতি থাকলে প্রতিবেদনে উঠে আসবে।
প্রসঙ্গত, খুলনায় একটি চাকরি হয়েছে এমন তথ্য মাকে জানিয়ে ২৪ অক্টোবর ঢাকার সূত্রাপুরের বাসা থেকে বের হন এটিএম খালেকুজ্জামান। ৩০ অক্টোবর তার গলিত মরদেহ পাওয়া যায় মুলাদীর জয়ন্তী নদীতে। ২০১২ সালে বড় ভাই কামরুজ্জামান কবীরকে হত্যার ঘটনায় ২০১৪ সালে এটিএম খালেকুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। সম্প্রতি তিনি জামিনে বের হয়ে একা থাকতেন।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর