ওমরাহ পালন করা হলো না নিজাম উদ্দিনের
ওমরাহ পালন করতে কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা দেন নিজাম উদ্দিন সরকার (৬৫)। কিন্তু ঢাকা পৌঁছার আগেই কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। ট্রেনে নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে তার মেজো ছেলের বউ ফাতেমা বেগম (২৩), নাতনি তানহা বেগম (৪) ও নাতি মুয়াস উদ্দিন (১০ মাস) ছিল । তবে ভাগ্যক্রমে তারা তিনজন বেঁচে যান।
নিজাম উদ্দিন সরকার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের বরইচারা গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জোহর বরইছাড়া ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নিজ গ্রামের প্রধান কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তিনি তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক ছিলেন।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টের ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ঢাকাগামী এগারসিন্দুর ট্রেনটিকে মালবাহী একটি ট্রেন ধাক্কা দেয়। এ দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের একজন নিজাম উদ্দিন সরকার।
গ্রামবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সকাল ৯টায় ওমরাহর কাগজপত্র জমা দিতে এবং ছেলের বউ ফাতেমার চিকিৎসা করাতে ঢাকার উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা দেন তিনি। বেলা ১১টায় কালনী ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। ট্রেনটি মিস করায় পরে মেজো ছেলের বউ ও নাতি নাতনিসহ বিকেল ৩টার দিকে এগারসিন্দুর ট্রেনে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন নিজাম উদ্দিন। ভৈরব থেকে ট্রেন ছাড়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বড় ছেলে কাঞ্চন সরকার রাতে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে সৌদি আরব থেকে সকালে বাড়িতে আসেন বাবাকে শেষবারের মতো দেখতে। বাবার মরদেহের পাশে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছিলেন কাঞ্চনসহ স্বজনরা।
নিহতের ছোট ছেলে আনিস কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবা ওমরাহ পালনের জন্য কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য সোমবার সকাল ৯টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওয়ানা দেন। প্রথমে আমার বাসায় আসার কথা ছিল। বাবার আর ওমরাহ করা হলো না। আল্লাহ যেন বাবাকে কবুল করেন।
এমজেইউ