টাকার অভাবে শুরু হচ্ছে না ভাঙ্গা-কুয়াকাটা রেলপথ প্রকল্প

ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রুটে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে ১ নভেম্বর। নতুন রুটটি চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে স্থলপথে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের আরেক পালক যুক্ত হবে। কিন্তু ভাঙ্গা থেকে বরিশাল-পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রেলপথ নির্মাণের অগ্রগতি আশানুরূপ হয়নি। টাকার অভাবে এখনো কাজ শুরুই হয়নি।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর বলছে, টাকার অভাবে এই রুটের কাজ থেমে আছে। এদিকে অধিগ্রহণ করা হতে পারে এমন জমির মালিকরা পড়েছেন বিপাকে। জমিতে অবকাঠামো উন্নয়ন বা হাতবদল করতে পারছেন না তারা।
জানা গেছে, ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। নতুন এই রেলপথটি নির্মাণ ২০২২ সালে শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ২০২৯ সালে।
২০১৯ সালে ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার দোহা, স্পেনের টিপসা ও বাংলাদেশের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিডিসির জয়েন্ট ভেঞ্চারে ভাঙ্গা-কুয়াকাটা রেলপথের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করা হয়। দুই বছর সমীক্ষার পরে ২০২১ সালের জুলাই মাসে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উঠে আসে প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫ হাজার ৬৩৮ একর জমি প্রয়োজন হবে।
সমীক্ষা চলাকালীন সময়ে রেলপথ নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ হতে পারে এমন জমিতে থাকা গাছ, বসতবাড়ি শনাক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভূমি মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, নতুন করে কোনো স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ ও স্থাপনা মেরামত থেকে বিরত থাকতে।
বরিশাল নগরীর ২২, ২৩, ২৫, ২৮ ও ২৯ নং ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সম্ভাব্যতা রয়েছে। সমীক্ষায় এই চার ওয়ার্ডের কয়েকশ পরিবারকে উল্লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তেমনি একজন ২৮ ওয়ার্ডের চহুতপুরের বাসিন্দা মামুন মোক্তার বলেন, আমাদের বাড়ির এখানে রেলস্টেশন হওয়ার কথা। জরিপ করে দুই বছর আগেই জানিয়েছে। ঘরবাড়ি, গাছে লাল চিহ্ন দিয়ে গেছে। এখন আমরা ঘরবাড়ির সংস্কারও করতে পারছি না। আবার গাছ লাগাতে বা কাটতেও পারি না। তবে উন্নয়নের জন্য কিছুটা বিড়ম্বনা হলেও দক্ষিণাঞ্চল বাসীর দাবি দ্রুতগতিতে রেলপথ নির্মাণ করার।
বরিশাল রেললাইন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, ভাঙ্গা থেকে কুয়াকাটার রেললাইন বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আমরা আন্দোলন করে আসছি। এই রুটে রেললাইন বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বিলম্ব না করে দ্রুত রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু করা হোক।
রেলওয়ে প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম সলিমুল্লাহ বাহার বলেন, ভাঙ্গা-বরিশাল-পায়রাবন্দর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি, জরিপ, ভূমি অধিগ্রহণ ও রেললাইনের নকশার কাজ বহুলাংশে এগিয়েছে। তবে প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ নিশ্চিত না হওয়ায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলেই বরিশালে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএএ