৪ ঘণ্টা পর দুর্ঘটনাস্থল ছেড়ে গেল মালবাহী ট্রেন
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় ৪ ঘণ্টা পর মালবাহী ট্রেনটি ঘটনাস্থল ছেড়ে গেছে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ট্রেনটি দুর্ঘটনাস্থল ভৈরব জংশনের পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর এলাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, ইতোমধ্যে মালবাহী ট্রেনটি স্টেশন ত্যাগ করেছে। উদ্ধারকারী ট্রেন এসেছে। যাত্রীবাহী ট্রেনটি উদ্ধারে কাজ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত ডাক্তার আছেন। যাদের উন্নত চিকিৎসা দরকার তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মরদেহ দাফনের জন্য স্বজনদের ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ইতোমধ্যে উদ্ধারকারী ট্রেন দুর্ঘটনাকবলিত যাত্রীবাহী ট্রেনটি উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে। খুব তাড়াতাড়ি ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন
এদিকে ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি থেকে একে একে বের করা হচ্ছে মরদেহ। অন্তত ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে র্যাব-বিজিবি।
র্যাব-৯ এর এএসপি গোলাম মোহাম্মদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাস্থলে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন। ২৪ জনের মরদেহ উদ্ধারের তথ্য জানতে পেরেছি। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এনামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে প্রথমে ভৈরব থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ১০টি ইউনিট উদ্ধার কাজে যোগ দেয়। এছাড়াও ঢাকা থেকে একটি বিশেষ ইউনিট ঘটনাস্থলে আসছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব জংশনের কাছাকাছি গাইনাহাটি এলাকায় ঢাকাগামী এগারসিন্দুর ও ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী একটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মালবাহী ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল, আর যাত্রীবাহী ট্রেনটি যাচ্ছিল কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায়। ভৈরব জংশনের আউটার পয়েন্ট ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের শেষ দুই বগিতে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এ সময় যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যায়। এতে অন্তত দেড় শতাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরএআর