জেব্রা, কমন ইল্যান্ড ও নীলগাই পরিবারে নতুন অতিথি
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আবারও বেশ কয়েকটি প্রজাতির পরিবারে নতুন অতিথির জন্ম হয়েছে। গত বেশ কিছু দিন পূর্বে এ প্রাণীগুলোর জন্ম হলেও শাবকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) এই তথ্য প্রকাশ করে।
জেব্রা পরিবারে দুই অতিথি
পার্কে জেব্রা পরিবারে নতুন দুই অতিথির জন্ম হয়েছে। নতুন অতিথি নিয়ে পার্কে জেব্রার সংখ্যা দাঁড়াল ২৯টিতে। এর মধ্যে ১৬টি পুরুষ ও ১৩টি মাদি। পার্ক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গত ৫ সেপ্টেম্বর একটি ও ১৩ সেপ্টেম্বর একটি শাবকের জন্ম হয়। শাবকগুলো সুস্থ আছে।
দ্বিতীয়বারের মতো শাবকের জন্ম দিল কমন ইল্যান্ড
সাফারি পার্কে আফ্রিকান প্রাণী কমন ইল্যান্ড পরিবারেও নতুন শাবকের জন্ম হয়েছে। গত ৯ আগস্ট এ প্রাণীর জন্ম হয়। এ প্রাণীর আচরণ অনুযায়ী শাবকের জন্ম হলেও নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত মা প্রাণীটি নিরাপত্তার জন্য শাবককে ঝোপের আড়ালে রাখে। শাবকটি হাঁটাচলা শেখার পর মায়ের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসে।
সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কমন ইল্যান্ড এন্টিলুপ প্রজাতির আফ্রিকান প্রাণী। আফ্রিকা মহাদেশেই মূলত এদের বিচরণ। একটি মাদি কমন ইল্যান্ড প্রাপ্তবয়স্ক পর্যন্ত ওজন হয় ৩০০-৬০০কেজি। পুরুষের ওজন ৪০০-৯০০ পর্যন্ত হয়। এদের দেহের দৈর্ঘ্য মাদির ক্ষেত্রে ৮০-১১০ ইঞ্চি ও পুরুষের ৯৪-১৩৬ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। এরা মূলত তৃণভোজী।
সাফারি পার্ক প্রতিষ্ঠার পর ২০১৫ সালের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে একটি পুরুষ ও একটি মাদি কমন ইল্যান্ড আনা হয়। পরে ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এ পরিবারে প্রথমবারের মতো শাবকের জন্ম হয়। বর্তমানে পার্কে নতুন শাবক নিয়ে কমন ইল্যান্ড পরিবারের সংখ্যা চারে দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে দুটি পুরুষ ও দুটি মাদি।
আবারও জোড়া শাবকের জন্ম দিল নীলগাই
বর্তমানে এ প্রাণীটি বিলুপ্তপ্রায়। ২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জব্দ হওয়া বেশ কয়েকটি নীলগাই উদ্ধার করে স্থান দেওয়া হয় গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। সেখান থেকেই এখন জন্ম হচ্ছে নতুন অতিথির। গত ৭ অক্টোবর একটি মাদি নীলগাই দুটি শাবকের জন্ম দেয়। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো দুটি শাবকের জন্ম হয়েছিল। নতুন শাবক নিয়ে পার্কের নীলগাই পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৮টিতে দাঁড়াল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরিবেশ অনুকূলে থাকায় ও সঠিক পরিচর্যায় নিয়মিত প্রাণীর জন্ম হচ্ছে পার্কে। প্রতিটি প্রাণী শাবকের জন্মের পর আমরা বিশেষ নজরদারি করে থাকি। মা ও শাবকের পুষ্টির কথা বিবেচনায় আমরা বিশেষ খাবারও পরিবেশন করি। নতুন শাবকগুলো এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছে, মায়ের সঙ্গে ঘুরছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সাফারি পার্কে প্রাণী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেছি। সঠিক খাবার ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী হতে নিয়মিত শাবকের জন্ম হচ্ছে। দেশি-বিদেশি নানা প্রাণীর সমাহার থাকায় দর্শনার্থীদের অন্যতম বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে পার্কটি।
তিনি আরও বলেন, ভালো খবর হলো আমাদের জেব্রা পরিবারে যে ক্ষতি অতীতে হয়েছিল তা আমরা কাটিয়ে উঠেছি।
শিহাব খান/এমজেইউ