ঘুষ না দেওয়ায় মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
বগুড়ার শেরপুরের ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের নামে বিরোধপূর্ণ জমির সঠিক সরেজমিন প্রতিবেদন দেওয়ার নামে অর্ধ লাখ টাকার ঘুষ দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পেয়ে তিনি ভুয়া প্রতিবেদন দিয়েছেন।
মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে জিহাদ আলী সরকার। রোববার শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে তিনি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার একই অভিযোগ বগুড়া জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া কার্যালয়ে দেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে ভবানীপুর ইউনিয়নের চাঁন মাহমুদ সরকার ও মোছা. আজবাহাতুন বেওয়ার কাছে বালেন্দা মৌজায় জিহাদ আলীর বাবা ওমর আলী দলিল মূলে ৩৩ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু আরএস খতিয়ানে ওমর আলীর নামের পরিবর্তে তার মা আমেনা বিবির নামে রেকর্ড হয়। সেই রেকর্ড অনুযায়ী আমেনা বিবির কাছে থেকে অন্য দুই ছেলে জমির দলিল নিজেদের নামে করে নেন। বিষয়টি জানার পর জিহাদ আলী আদালতে মামলাও করেন।
এই মামলায় আদালত শেরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন চান। সহকারী কমিশনার ভূমি বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমকে। তিনি গত ৩ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
প্রতিবেদনে ভূমি কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, বিরোধপূর্ণ সেই জমির দলিল থাকলেও ওমর আলী বা তার ছেলে জিহাদ আলীর নামে আরএস রেকর্ড নেই। কিন্তু আমেনার পক্ষে এই জমির আরএস খতিয়ান রেকর্ড করা আছে। সেই রেকর্ড অনুযায়ী বিবাদীরা জমি ক্রয় করে সেখানে বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন।
এই প্রতিবেদন দেওয়ার পর আদালতে নারাজি দেন জিহাদ আলী। আদালত পরে বিষয়টি আবার তদন্তের নির্দেশ দেন সহকারী কমিশনারকে (ভূমি)। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউল করিম যে প্রতিবেদন দেন, সেখানে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের প্রতিবেদন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওই প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়, নালিশি সম্পত্তিতে মামলার বিবাদির কোনো দখল নেই।
জিহাদ আলী অভিযোগ করেন, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির আগে মাহবুবুল তার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। সেই টাকা না দেওয়াতে তিনি মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন।
তবে নিজে ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম। তিনি জানান, ‘আমি কোনো ঘুষ খাই না। টাকা পয়সা নেই না। অফিসে কম্পিউটারের কাজ করে বাদশা ও নাঈম। তারা টাকা নিতে পারে। আর আমি ওই জমির বিষয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছে শুনে প্রতিবেদন দিয়েছি।’
জিহাদ আলীর অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আসাফ-উদ-দৌলা নিওন/এএএ