কলমের খোঁচায় চোখ নষ্ট : বিচার চেয়ে কারাগারের সামনে বাদলের পরিবার

নোয়াখালী জেলা কারাগারে কলম দিয়ে আঘাত করে হাজতি নূর হোসেন বাদলের দুই চোখ নষ্ট করার ঘটনায় কয়েদি মাইন উদ্দিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন নূর হোসেন বাদলের মা রেহানা আক্তার। মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালী জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বাদলের মা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, ২০২১ সালে বেগমগঞ্জের একলাশপুরের নারী নির্যাতনের একটি মামলায় জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নূর হোসেন বাদলকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। পরে ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও অপর আরেকটি মামলায় তার বিচারকার্য চলমান থাকায় তাকে কারাগারে রাখা হয়। তার বাড়ি বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে। তার বাবার নাম শাহাব উদ্দিন। আর অভিযুক্ত কয়েদি মাইন উদ্দিন একই ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের হুমায়ূন কবিরের ছেলে। তিনি মাদক মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন। গত ১ অক্টোবর সকাল ৬টার দিকে পূর্বশত্রুতার জেরে জেলা কারাগারের নিচতলায় থাকা হাজতি নূর হোসেন বাদলের দুই চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করেন দ্বিতীয় তলায় থাকা কয়েদি মাইন উদ্দিন। তাৎক্ষণিক কারারক্ষীরা নূর হোসেনকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আজ মঙ্গলবার কারাগারের সামনে দাঁড়িয়ে বাদলের মা রেহানা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার একমাত্র ছেলে বাদল। তার চোখ শেষ হয়ে গেছে। আমরা কার কাছে তার চোখ ভিক্ষা চাইব? আমি সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া আমার ছেলেকে হত্যার চেষ্টাকারী মাইন উদ্দিনের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমি হতভাগা মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিজ্ঞাপন
বাদলের বোন বৃষ্টি আক্তার বলেন, আমার ভাই অপরাধী এবং সে সাজা ভোগ করছে। কিন্তু তার জীবন এভাবে হুমকির মধ্যে ফেলার জন্য মাইন উদ্দিনের বিচার চাই। কারাগার হলো নিরাপদ জায়গা, সেখানে যদি এমন নৃশংস ঘটনা ঘটে তাহলে আর কোথায় নিরাপত্তা চাইব।
বাদলের মামা নূর মোহাম্মদ বাবু ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাইন উদ্দিন পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার ভাগনের ওপর হামলা চালিয়েছে। বর্তমানে মাইন উদ্দিনের ভাই কিরণ আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। আমরা যদি কোনো কিছু করি তাহলে বাইরে যারা আছে তাদের অবস্থা নাকি খারাপ হয়ে যাবে। মাইন উদ্দিন বেগমগঞ্জের চিহ্নিত মাদক কারবারি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার সৈয়দ মো. জাবেদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাদলের মা কারাগারের সামনে অবস্থান করেছিলেন। আমাদের কাছে বেশকিছু তথ্য জানতে চেয়েছেন। তিনি লিখিত আকারে জমা দিলে আমরা তাদের সকল তথ্য জানাব। তবে আমরা সুচিকিৎসার জন্য বাদলকে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সেখানে সরকারিভাবে যে সেবা পাওয়ার কথা সেভাবে পেয়েছে। বর্তমানে সে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আছে। এছাড়া এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বিভাগীয় তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে যাদের নাম আসবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাসিব আল আমিন/এমজেইউ