পল্লী বিদ্যুতের দায়ের কোপে আশ্রয় হারাল হাজারো পাখি
সন্ধ্যা নামার আগ থেকেই পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হতো ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফকিরহাট বিশ্বরোড মোড়ে বটগাছের ডাল। হাজারো পাখি ঝাঁকে ঝাঁকে ভোরে খাদ্য সংগ্রহে বেরিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যায় দল বেঁধে ফিরে আসতো এই গাছে।
কিন্তু ফকিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীদের দায়ের কোপে নষ্ট হয়ে গেছে এদের আবাসস্থল। আশ্রয় হারিয়েছে হাজার হাজার চড়ুই ও শালিক পাখি।
রোববার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে ফকিরহাট পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গাছটির ডালগুলো গোড়া থেকে কেটে দেয়। ফলে আশ্রয় হারিয়ে হাজার হাজার পাখিদের গাছের চারপাশে উড়ে আর্তনাদ করতে দেখা যায়। এসময় পাখিগুলো বৈদ্যুতিক তার ও আশপাশের ভবনের কার্নিসে অবস্থান নেয়।
স্থানীয় একাধিক দোকানদার বলেন, সকালে খাবারের খোঁজে উড়ে গেলেও বিকেল হলেই হাজার হাজার পাখি এসে গাছটিতে আশ্রয় নিত। এসময় প্রতিটি পাতার ফাঁকে ফাঁকে পাখি বসে থাকতে দেখা যেত। পাখির কলতানে আশপাশের পরিবেশ মুখরিত হয়ে থাকত। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ হঠাৎ এসে গাছটির ডালগুলো কেটে রেখে চলে যায়। বিকেল থেকে পাখিগুলো আশ্রয় নিতে এসে ডালপালাহীন গাছের চারপাশে উড়ে আর্তনাদ করছে।
পাখিদের এ অসহায়ত্ব দেখে স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, গাছের পাশ দিয়ে টানানো বিদ্যুতের তারগুলো মোটা রাবারে ঢাকা ছিল। তাছাড়া ডালগুলো কোনো অবস্থায় তারের সঙ্গে লাগানো ছিল না। তাই রক্ষণাবেক্ষণের নামে ডাল কাটার কোনো যুক্তি নেই।
প্রখ্যাত পাখি বিশারদ শরীফুল বলেন, ‘পরিবেশের বন্ধু পাখিদের আশ্রয় ধ্বংস না করে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া যেত। অথবা গাছের শুধুমাত্র মগ ডালগুলো কাটা যেত।’
ফকিরহাট পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম আহসানুল করীম বলেন, ‘কাভার তার হলেও ৫ ফিট দূরত্ব পর্যন্ত গাছের ডাল কাটার নিয়ম রয়েছে। অনেক সময় ভুল করে ডালের গোড়া থেকে কেটে দেয় কর্মীরা। পরবর্তীতে তারা যেন এমন কাজ না করে সে বিষয়ে বলে দেওয়া হয়েছে।
শেখ আবু তালেব/আরকে