ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
রংপুরের তারাগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেছেন বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে উপজেলার সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও পল্লী চিকিৎসক আল ইবাদত হোসেন পাইলটের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই কলেজছাত্রী। এরপরই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটের চৌপথীর ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে গিয়ে তার সঙ্গে পরিচয় হয় ওই কলেজছাত্রীর। পরবর্তীতে উভয়ের মধ্যে মোবাইল ফোন নম্বর আদান-প্রদানের মাধ্যমে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবে কলেজছাত্রী রাজি না হলে শেষে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন চেয়ারম্যান।
পরবর্তীতে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের কথা বললে টালবাহানা করতে থাকেন চেয়ারম্যান। বিয়ে করবে না বুঝতে পেরে ওই ছাত্রী নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে কথা বলা বন্ধ রাখেন। কিন্তু চেয়ারম্যান ওই ছাত্রীর সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করেন। এরপর তার সঙ্গে ওই ছাত্রী সম্পর্ক না রাখলে সমাজে তার নামে বদনাম ছড়িয়ে দেবেন বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে ওই কলেজছাত্রীকে গত ১ অক্টোবর সকাল ৯টায় চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট ফোন করে তারাগঞ্জ বাজারের চেম্বারে ডেকে নেন। সেখানে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে রংপুরে ভাড়া বাসায় রাখার আশ্বাস দিয়ে তারাগঞ্জ শহরের কুর্শা আদর্শ স্কুলের সামনের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে শারীরিক মেলামেশা করে পরদিন সকালে ওই ছাত্রীকে তার বাসা থেকে চলে যেতে বলেন। এই পরিস্থিতিতে ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারকে বিষয়টি খুলে বলেন। তার পরিবারের লোকজন অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে অভিযোগ অস্বীকার করে তাদেরকে তাড়িয়ে দেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার থানায় হাজির হয়ে ওই কলেজছাত্রী নিজেই বাদী হয়ে চেয়ারম্যানকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে অভিযুক্ত সয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ নিয়ে ইউপি সদস্যরাও কথা বলতে রাজি হননি।
তবে চেয়ারম্যানের ছোট ভাই ডলার বলেন, ওই ছাত্রীর অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক।
তারাগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) জহুরুল হক বলেন, কলেজছাত্রীর সব ধরনের মেডিকেল পরীক্ষা বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হয়েছে। ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর