সিকিমে বন্যা, খুলে দেওয়া হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের সব গেট
ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশে দ্রুত বাড়ছে নদীটির পানি। ফলে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের সব গেট (৪৪টি) খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর নদী তীরবর্তী লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করছে প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার তিস্তা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি নেমে যেতে না যেতেই ফের বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ। এ নিয়ে দশবারের মতো বন্যার কবলে পড়েছেন তিস্তাপাড়ের মানুষরা।
তিস্তার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফের পানিবন্দি হতে শুরু করেছে এসব এলাকার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলো। এসব অঞ্চলে বিগত বন্যায় শুরু হওয়া ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলছে বলে দাবি করেছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে নদীপাড়ের মানুষকে সতর্ক করতে লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রামে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনকে পশুপাখিসহ প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখাসহ প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর একটি বাঁধ ভাঙার খবর শোনার পর থেকেই তিস্তাপাড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। আর নিরাপদ স্থানে যেতে স্কুল কিংবা আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বলা হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা ঢাকা পোস্টকে জানান, ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে এ নিয়ে চরাঞ্চলের মানুষদের খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এমজেইউ