সিজারের ১৭ দিন পর রোগীর পেট থেকে বের হলো গজ
বরিশালের বানারীপাড়ার হামিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালে সিজারের সময় প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেন এক চিকিৎসক। এর ১৭ দিন পরে দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করে ভুক্তভোগী নারী শিল্পী আক্তারের পেট থেকে ওই গজ বের করা হয়।
বর্তমানে চিকিৎসকের ভুলের শিকার ওই নারী শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্বজনরা জানিয়েছেন, ওই নারীর নবজাতক সুস্থ থাকলেও তিনি এখনও শঙ্কামুক্ত হননি।
ভুক্তভোগী নারীর বোন ইসরাত জাহান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বানারীপাড়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে আমাদের বাড়ি। বোন শিল্পী আক্তারের প্রসব বেদনা উঠলে উপজেলা সদরের হামিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালে কনসালটেন্ট ডা. লুৎফুল আজিজের অধীনে তাকে ভর্তি করা হয়। তিনি স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত না পেরে ১৩ সেপ্টেম্বর সিজারের মাধ্যমে আমার বোনের কন্যা সন্তান হয়।
ইসরাত জাহান আরও বলেন, অপারেশনের পর থেকে আমার বোনের প্রসাব-পায়খানা বন্ধ ছিল। আমরা টেনশন করছিলাম। আমার বোনের স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করায়। তখনও তারা আমদের কিছু জানায়নি। এদিকে আমার বোন দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। তাই সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) এনে ভর্তি করি। এখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান আমার বোনের পেটের মধ্যে গজ রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়েছে। তারা আমাদের ছাড়পত্র দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করান। তবে ঝুঁকি বুঝে আমরা সিনিয়র এক চিকিৎসকের রেফারেন্সে ২৯ সেপ্টেম্বর ওই হাসপাতালেই অপারেশন করাই। প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় অপারেশন করে আমার বোনের পেটের মধ্য থেকে দুই হাত লম্বা গজ বের করা হয়।
তিনি শেবাচিমর চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বলেন, আরও দুই তিনদিন এইভাবে থাকলে আমার বোন মারা যেত। আমরা চাই হামিদ মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ভুল করা ওই ডাক্তারের শাস্তি হোক। তাদের অপচিকিৎসায় আমার বোন আজ মৃত্যুপথযাত্রী।
অভিযোগের বিষয়ে হামিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালের মালিক অর্পণ বলেন, আমি বানারীপাড়াতে নেই। তবে এমন একটি ঘটনা আমার হাসপাতালে ঘটেছে শুনেছি। তবে বিস্তারিত কিছুই জানি না। বিস্তারিত জেনে বলতে পারব আসলে কি ঘটনা ঘটেছিল।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে