বিছানায় পড়েছিল মা-ছেলের মরদেহ, পাশের ঘরে বাবার
সাভারের আশুলিয়ায় ৬ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে ঢুকে গার্মেন্টস শ্রমিক স্বামী-স্ত্রী ও তাদের ১২ বছরের ছেলের গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে স্বনির্ভর ধামসোনা ইউনিয়নের জামগড়া ফকির বাড়ি মোড়ের মেহেদী হাসানের ৬ তলা বাড়ির ৪ তলার একটি ফ্ল্যাটে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ছাড়াও, র্যাব, ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশসহ অপরাধ তদন্ত বিভাগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন সূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছে।
নিহতরা হলেন- ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ থানার লোহাগড়া গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে মুক্তার হোসেন বাবুল (৫০), তার স্ত্রী শাহিদা বেগম (৪০) ও ছেলে মেহেদী হাসান জয় (১২)। শাহিদা বেগমের বাড়ি রাজশাহী জেলায় বলে জানা গেছে। নিহত স্বামী-স্ত্রী পৃথক পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হলে পাশের ফ্ল্যাটের এক নারী দরজায় ধাক্কা দেওয়ায় সেটি খুলে যায়। ওই নারী বিছানায় মা-ছেলের মরদেহ দেখতে পান। এ সময় ওই নারী চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়ারা এসে থানায় খবর দেন। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে অপরাধ তদন্ত বিভাগের ক্রাইম সিন টিম উপস্থিত হয়।
আরও পড়ুন : আশুলিয়ায় ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার
একই বাড়ির ৩ তলার একটি ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মামুন মিয়া বলেন, আমি আজই বাড়ি থেকে ফিরলাম। ফিরে এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে জানতে পারলাম। আমি পাঠাও কুরিয়ারে চাকরি করি। নিহত এই পরিবারের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। এভাবে এক সঙ্গে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় আমরা খুব আতঙ্কিত। আমরাও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছি।
নিহত মোক্তার হোসেনের দুলাভাই রহিম মোবাইল ফোনে বলেন, মোক্তার হোসেন সম্পর্কে আমার শ্যালক। সে প্রায় ৭/৮ বছর ধরে ঢাকায় থাকে। আর আমি ঠাকুরগাঁও থাকি। আমি আসলে কিছুই জানতাম না।
আশুলিয়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জোহাব আলী বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে বিছানার উপর মা-ছেলে মরদেহ দেখতে পেয়েছি। পরে পাশের ঘর থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় বাবুলের মরদেহ দেখতে পাই। নিহত তিনজনের গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তে শেষে ও আসামি গ্রেপ্তার হলে হত্যাকাণ্ডের কারণ জানা যাবে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান পিপিএম বলেন, একই পরিবারের তিনজনকে খুব নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা ধারণা করছি অত্যন্ত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। আমরা পুরো বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই আমরা এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে পারব।
মাহিদুল মাহিদ/আরকে