কর্মচারীর বিয়েতে যোগ দিতে হেলিকপ্টারে চড়ে গোপালগঞ্জে সৌদি নাগরিক
ভাতিজার বিয়েতে অংশ নিতে সৌদি আরবের মালিকের (কফিল) ইচ্ছায় তাকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে গোপালগঞ্জের নিজ গ্রামের বাড়িতে এসেছেন লালন শেখ (৪৫) নামের এক প্রবাসী। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া গ্রামের পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি অ্যান্ড কলেজে মাঠে হেলিকপ্টারে এসে নামেন সৌদি নাগরিক মি. আবু বন্দর এবং প্রবাসী লালন শেখ।
প্রবাসী লালন শেখ সদর উপজেলার কাজুলিয়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিন শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালন শেখ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের নাদিম এলাকার বাসিন্দা মি. আবু বন্দরের মালিকানাধীন ভাঙারি মালামালের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। চাকরির সুবাদে মালিক আবু বন্দরের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে। লালন শেখের ভাতিজার বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আজ বুধবার সকালে সৌদি আরবের একটি ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন লালন শেখ। পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে গোপালগঞ্জের কাজুলিয়ায় নিজ গ্রামে আসেন তারা।
এদিকে প্রবাসী লালন শেখের সঙ্গে তার সৌদি মালিকের (কফিল) গ্রামে আসার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বেশ কয়েক দিন ধরে কাজুলিয়া গ্রামবাসীর মধ্যে চলছিল উৎসাহ-উদ্দীপনা। আজ তাদের একনজর দেখতে সকাল থেকেই উৎসুক জনতা অপেক্ষা করতে থাকেন পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি অ্যান্ড কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে। সৌদি থেকে আসা নাগরিককে বরণ করে নিতে নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। আজ বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টার অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে হৈহুল্লোড় পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন সৌদি প্রবাসী লালন শেখ এবং তার মালিক (কফিল) মি. আবু বন্দরকে। পরে সেখান থেকে প্রাইভেটকারযোগে নিজ গ্রাম কাজুলিয়ার নিজ বাড়িতে সৌদি মালিককে নিয়ে যান লালন শেখ। বাড়িতে পৌঁছানোর পর সৌদি নাগরিককে দেখতে লালন শেখের বাড়িতে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন সৌদি নাগরিক মি. আবু বন্দর।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশি কর্মীর গ্রামে এসে মুগ্ধ সৌদি নাগরিক
নিজ কর্মীর বাড়ি বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে সৌদি নাগরিক মি. আবু বন্দর ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি। এখানে আসতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। এখনকার মানুষের ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি প্রায় দুই সপ্তাহ থাকব। এখানকার প্রতিটি এলাকা আমি ঘুরে দেখব। এছাড়া আমার এক কর্মীর বিয়ের দাওয়াতে অংশ নেব। এখান থেকে ফিরে আমার প্রতিষ্ঠানে এই এলাকার আরও কর্মী নেব।
সৌদি প্রবাসী লালন শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার কফিল (মালিক) আমার ভাতিজার বিয়ের দাওয়াত খেতে আমাদের বাড়িতে এসেছেন। আমার ভাতিজাও আমার কফিলের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। তিনি আমাদের বাড়িতে দুই সপ্তাহের মতো থাকবেন। পরে আমি ও আমার কফিল একসঙ্গে সৌদি ফিরে যাব।
কাজুলিয়া গ্রামের রফিক শেখ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এর আগে কখনো কেউ আমাদের গ্রামে হেলিকপ্টারে করে আসেনি। আমাদের গ্রামের ছেলে লালন শেখের সঙ্গে এসেছেন তিনি (সৌদি নাগরিক)। আমরা খুবই খুশি হয়েছি হেলিকপ্টার দেখে।
আশিক জামান/এমজেইউ