পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে ২৫ কিলোমিটার যানজট
নওগাঁর মান্দায় নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলকে কেন্দ্র করে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের মাঝে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন শ্রমিক।
এছাড়া ভাঙচুর করা হয় দুটি বাস ও ১৫টি অটোরিকশা। এ ঘটনার পর থেকেই নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কে আড়াআড়িভাবে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
এদিকে, বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন সমস্যার নিরসন করতে না পারায় এবং রাস্তার ব্যারিকেড তুলে না নেওয়ায় নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কের সতিহাট থেকে সাবাইহাট পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন উভয় দিকে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ।
সিএনজি-মালিক শ্রমিক সমিতির সাবাইহাট শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁ বাস মালিক সমিতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন মান্দার চৌদ্দমাইল ও ফেরিঘাট এলাকায় অবৈধভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে আসছে। এ নিয়ে অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে গত ২৯ আগস্ট মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন তাদেরকে মারধর করেন। আজ জুমার নামাজের পর ফেরিঘাট থেকে রাজশাহীতে যাওয়ার সময় উপজেলার সাবাইহাট বাজারের কাছে চৌদ্দমাইল এলাকায় একটি অটোরিকশাকে থামিয়ে এর চালককে মারধর করে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের লোকজন। পরে উপজেলার ফেরিঘাট এলাকায় বাসশ্রমিকরা আবারও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিক ও চালকের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ১৫-১৬টি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া হামলায় অন্তত ১৫ জন অটোরিকশা শ্রমিক আহত হয়েছেন।
এদিকে, নওগাঁ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এসএম মতিউজ্জামান মতি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার যান অবৈধ হলেও অটোরিকশার চালকরা নওগাঁ-রাজশাহী আঞ্চলিক মহাসড়কে জোর করে গাড়ি চালিয়ে আসছিলেন। প্রশাসন ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা কর্ণপাত করেনি। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ দুপুর আড়াইটার দিকে সাবাইহাট বাজারে অটোরিকশার চালক ও মালিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে দুটি বাস ভাঙচুর করে। এ সময় বাস দুটির চালককে মারধর এবং এক বাসচালকের সহকারীকে ছুরিকাঘাত করে আহত করা হয়। পরে বাস শ্রমিকরা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানোর জন্য রাস্তার ওপর আড়াআড়িভাবে বাস রেখে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষ হয়।
এ বিষয়ে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আহসানুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংঘর্ষ এড়াতে ফেরিঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যকার এ দ্বন্দ্ব দীর্ঘ সময়ের। এখানে উভয় পক্ষের কিছু দাবি-দাওয়া রয়েছে। তাই হঠাৎ করে এটি সমাধান সম্ভব নয়। এরপরও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশের পক্ষ থেকে দুই পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা চলছে। আশা করছি উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসতে পারলে সমস্যা সমাধান হবে।
আরমান হোসেন রুমন/এমজেইউ