৯২ ভাগ কাজ সম্পন্ন, ১৫ অক্টোবর চলবে পরীক্ষামূলক ট্রেন
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের ৯২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে কক্সবাজার রেল ট্র্যাকের কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। আইকনিক রেলস্টেশন, কালভার্ট, লেভেল ক্রসিং, হাইওয়ে ক্রসিংয়ের নির্মাণও শেষ হতে চলছে। আগামী ১৫ অক্টোবর রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের উপস্থিতিতে পরীক্ষামূলকভাবে কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেন চলবে।
এই রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল। দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন করে ১০২ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজ বর্তমানে প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পের নানা চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করে এখন ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত এই রেললাইন।
তিনি আরও বলেন, অক্টোবরের মাঝামাঝি অর্থাৎ আগামী ১৫ অক্টোবর নাগাদ দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। একটি ইঞ্জিন এবং ছয়টি বগি নিয়ে ট্রেনটি দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত যাবে। আর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথ উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তখন ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে। প্রকল্পের আওতায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন করে ১০২ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথ তৈরি করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে বিশ্বমানের সর্বাধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণের পাশাপাশি দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মোট নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া, সংরক্ষিত বন এলাকায় রেললাইন স্থাপনে বন্য হাতি ও বন্যপ্রাণী চলাচলের জন্য ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া ৪৫০ মিটার রেলপথ পুনঃসংস্কার শেষ হয়েছে। অতিসত্বর এ রুটটির কাজ শতভাগ শেষ হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
এদিকে রেল আসার খবরে কক্সবাজারের মানুষের মাঝে উৎসব বিরাজ করছে। কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কক্সবাজারে ট্রেন আসবে এটা আমাদের কাছে স্বপ্ন মনে হলেও প্রধানমন্ত্রীর কারণে এটা বাস্তব হতে চলছে। ট্রেন এলে কক্সবাজারের অর্থনৈতিক চাকা আরও সচল হবে।
কক্সবাজারের পর্যটক ব্যবসায়ী সুলতান আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রেন চালু হলে কক্সবাজারে আরও তিনগুণ পর্যটক বাড়বে। পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকও আসবে। ট্রেন আসার খবরটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।
কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় সবকিছু থাকলেও ট্রেনের ছোঁয়া থেকে এতদিন কক্সবাজারবাসী বঞ্চিত ছিল। সেই অভাব পূরণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান ঢাকা পোস্টকে বলেন, রেল প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৫ অক্টোবর কক্সবাজার রেললাইনে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে।
এমজেইউ