সালথায় থমথমে পরিস্থিতি, রাতের ঘটনায় নিহত ১

ফরিদপুরের সালথায় বিভিন্ন সরকারি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আহত হাফেজ জুবায়ের হোসেন (২৫) নামে একজন মারা গেছেন। সোমবার (৫ এপ্রিল) রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এদিকে গুজব ছড়িয়ে সোমবার রাতে হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় করোনা মোকাবিলায় কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করতে দুই আনসার সদস্য ও ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়ে সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা খান হিরামণি ফুকরা বাজারে যান। সে সময় চা পান করতে আসা জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে লাঠিপেটা করা হয়েছিল বলে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ।
এ ঘটনার জেরে ফুকরা বাজারে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর সেখানে সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ পৌঁছালে উত্তেজিত জনতা পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে মিজানুর রহমানের মাথা ফেটে যায়।
পরে স্থানীয় জনতা পুলিশের গুলিতে দুইজনের মৃত্যু ও বাহিরদিয়া মাদরাসার মাওলানা আকরাম হোসেন এবং জনৈক আরেক মাওলানার গ্রেফতারের গুজব ছড়িয়ে দেয়। এমন গুজবে হাজারো মানুষ এসে থানা ঘেরাও করে। পরে উপজেলা পরিষদ, থানা, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, উপজেলা কৃষি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ সদস্যসহ আহত হন কমপক্ষে ২০ জন। আহতদের মধ্যে জুবায়ের হোসেন (২৫) নামে এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
সালথা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিব সরকার বলেন, সরকারি নির্দেশনা পালন করতে ওই বাজারে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি)। সেখানে তিনি যাওয়ার পর মানুষের জটলা সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় তিনি ওই স্থান থেকে ফিরে আসেন এবং সেখানে পুলিশের একটি দল পাঠান।
সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বর জানান, আমার বাসভবনসহ বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বিপিএম বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
বি কে সিকদার সজল/এসপি/জেএস