অপহরণ করে ৫ লাখ টাকা দাবি, দুই দিন পর মিলল শিশুর মরদেহ
টাঙ্গাইলের সখীপুরে অপহরণের দুই দিন পর সামিয়া আক্তার (৯) নামে এক শিশুর মরদেহ পাওয়া গেছে। তাকে অপহরণের পর ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল অপহরণকারীরা। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার দাড়িয়াপুর উত্তরপাড়ায় বাড়ির কাছের একটি ঝোপ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সামিয়া উপজেলার দাড়িয়াপুর গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার রঞ্জু মিয়া ও রুপা বেগম দম্পতির মেয়ে। সে মাঝিরচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
সামিয়ার চাচা আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) প্রাইভেট পড়ে বাড়িতে আসার সময় সামিয়াকে অপহরণ করা হয়। ওই দিনই অডিও বার্তায় পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। বিষয়টি পুলিশকে জানালে মেয়েটিকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি থানায় জানানো হলেও মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
সামিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সকাল ৮টার দিকে সামিয়া বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়া শেষে সহপাঠীদের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল সে। পথে একটি দোকানে সহপাঠীরা কিছু কিনতে দাঁড়ালে সামিয়া একাই বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। এদিকে সামিয়ার বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে তার মা রুপা বেগম ওই শিক্ষককে ফোন দিয়ে জানতে পারেন পড়া শেষে অনেক আগেই সে বেরিয়ে গেছে। পরে রুপা বেগম মেয়েকে খুঁজতে বের হলে বাড়ির কাছাকাছি এক স্থানে তার ব্যবহৃত জুতা পড়ে থাকতে দেখেন। কিছুক্ষণ পর তার মোবাইল ফোনের ইমোতে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে একটি অডিও বার্তা আসে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। পরে সামিয়ার বাবা রঞ্জু মিয়া বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশের একাধিক ইউনিট তাকে উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করে।
সখীপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, মেয়েটিকে জীবিত উদ্ধারে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। এখন তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠনো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একটি ইমু নম্বর থেকে অডিও বার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নম্বরটি শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। নম্বর শনাক্তের পাশাপাশি জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অভিজিৎ ঘোষ/আরএআর