২০ বছর আগে ভারতে পাচার হওয়া ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি
প্রায় ২০ বছর আগে ভারতে পাচার হওয়া ছেলেকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন রেখা রানী নামে এক নারী। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার দেওপুরা-শেখপাড়ার শিবেন্দ্র এক্কার স্ত্রী। গত সোমবার (২৮ আগস্ট) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে ছেলেকে ফিরে পেতে লিখিত আবেদন করেন তিনি।
লিখিত আবেদনে রেখা রানী উল্লেখ করেন, ২০ বছর আগে যখন তার ছেলে শ্রী দিলিপ এক্কার বয়স তিন বছর, তখন সে বাড়ির বাইরে খেলা করছিল। এ সময় তার ভাসুর মকিন এক্কা ছেলেকে নিয়ে আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন মকিন এক্কা তার ছেলেকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এরপর বিভিন্ন দেন দরবার করেও ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে পারেননি। এমনকি ছেলের অবস্থান জানতে পারলেও অসহায়ত্বের কারণে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ছেলেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলে ভাসুর মকিন এক্কা ও তার স্ত্রী সাবিনা এক্কা পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেওয়াসহ নানা হয়রানির হুমকি দিচ্ছেন।
রেখা রানী বলেন, এখন যে বাড়িতে বসবাস করছি, সে বাড়ি ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছে মকিন এক্কা। বাড়ি ছেড়ে না গেলে বড় ছেলে দিলিপ এক্কার মতো ছোট ছেলে জয়ন্ত এককাকেও ভারতে পাচার করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ঝুরকুনি এক্কা বলেন, ছোট বাচ্চাকে পরিকল্পনা করে ভারতে পাচার করা হয়েছে। বাচ্চা হারানোর পর থেকে বুকে যন্ত্রণা নিয়ে ছেলেকে উদ্ধারে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রেখা রানী। পাচার হওয়া ছেলেকে মায়ের বুকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
রেখার মা বিগন খালকো বলেন, আমার মেয়ে অন্যের বাড়িতে কামলা খেটে সংসার চালায়। এরপরও ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় ২০ বছর ধরে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। সরকার উদ্যোগ নিলেই নাতিকে ফিরে পাওয়া সম্ভব হবে।
ধামুইরহাট উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও দিলিপের চাচাতো বোন সাবিনা এক্কা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কাকি আমার পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। যার কোনো সত্যতা নেই।
তবে বিষয়ে জানতে মকিন এক্কার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন বলেন, লিখিত অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর