যৌতুকের মামলায় পুলিশ সদস্যের এক বছরের কারাদণ্ড
গোপালগঞ্জে স্ত্রীর করা যৌতুকের মামলায় জুয়েল মোল্লা (২৫) নামে এক পুলিশ সদস্যকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাশিয়ানী বিচারিক আদালতের বিচারক অনুশ্রী রায় এ আদেশ দেন। এ সময় মামলার অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ওই পুলিশ সদস্য, কাশিয়ানী উপজেলার জোতকুরা গ্রামের আজাহার মোল্লার ছেলে। তিনি মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সে পুলিশের কনস্টবল পদে কর্মরত ছিলেন।
খালাস প্রাপ্তরা হলেন- কাশিয়ানীর জোতকুরা গ্রামের ছয়জুদ্দিন মোল্লার ছেলে আজাহার মোল্লা, বড় ছেলে জসীম মোল্লা ও সদর উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের শহীদ মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্লা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালে বাদী সাইমা আক্তার সীমার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে চাকরির কথা বলে ৩ লাখ টাকা নেন জুয়েল। পরে ওই বছরেই পুলিশে চাকরি হওয়ার পর প্রশিক্ষণে যাওয়ার আগে ইসলামি শরিয়াহ মোতাবেক সীমাকে বিয়ে করেন তিনি। পরে ২০১৭ সালে সীমা পুলিশ সদস্যকে কাবিনের টাকার চাপ দিলে উলটো সীমার কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। সীমা যৌতুক দিতে রাজি না হলে জুয়েল বিয়ের কথা অস্বীকার করেন।
পরে সে বছরেই সীমা গোপালগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে মামলা দায়ের করেন। ২০২০ সালে মামলার ভয়ে সীমাকে ঘরে তোলার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে পুনরায় তার কাছে দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। না হলে তাকে ঘরে তুলবেন না বলে জানিয়ে দেন ওই পুলিশ সদস্য।
পরে সীমা বাদী হয়ে জুয়েলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় গোপালগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাশিয়ানী আমলী আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাশিয়ানী থানাকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে ৪ জনকে যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারিক আদালতের বিচারক যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় এ দণ্ডাদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক খান খোকন বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। আমরা এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।
মামলার বাদী বলেন, আমার সঙ্গে প্রথমে প্রতারণা করে ৩ লাখ টাকা নেয়। পরে আমাকে শরিয়াহ মেনে বিয়ে করেও অস্বীকার করলে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। পরে আমাকে বাড়িতে নিবে বলে আবার আমার কাছে দশ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন।
আশিক জামান/এএএ