লকডাউনের খবরে নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ
করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাওয়ায় আগামী সোমবার (০৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে লকডাউন দিচ্ছে সরকার। এই লকডাউনের খবরে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। যাদের দিন আনি দিন খাই অবস্থা তাদের দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই।
লকডাউনের খবরে শনিবার (০৩ এপ্রিল) বিকেলে সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ফুটপাতের দোকানি, রিকশা চালকসহ বেশ কয়েকজন নিম্ন আয়ের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা যায়। একদিন কাজ না করলে যাদের মুখে খাবার জোটে না, লকডাউন হলে তাদের পরিবার কীভাবে চালবে? পরিবারের খাবার আসবে কোথা থেকে? এসব চিন্তায় মলিন নিম্ন আয়ের মানুষের মুখ।
সাভারের ফুটপাতের ব্যবসায়ী আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এর আগের লকডাউনে ব্যবসা করতে পারি নাই। বসে বসে মূলধন যতটুকু ছিল তা সবই শেষ করেছি। গত বছরে ফুটপাতে দোকান করেছি ৪৫ দিন। এছাড়া পুরো এক বছরে কোনো ইনকাম ছিল না। সব পুঁজি শেষ হওয়ায় এখনও ঠিক মতো ব্যবসা করতে পারছি না। এখন বসে বসে ভাবছি আবার লকডাউন হলে কী করবো? এবার ব্যবসা না করতে পারলে ঋণের বোঝা আরও বেড়ে যাবে।
আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফুটপাতের ব্যবসায়ী মইনুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগের বারের লকডাউনেই তো ঋণ করেছি অনেক টাকা। সেগুলো এখনও শোধ করতে পারিনি। আবার লকডাউন হলে আমার ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই সম্ভব হবে না। এজন্য আমার স্ত্রী-সন্তানকে আগেই বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। লকডাউনে বসে বসে তাদের খরচ চালানো সম্ভব নয়।
বাইপাইল এলাকার রিকশাচালক ওলিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভালো ইনকামের আশায় ঢাকায় আসলাম, এখন তো বিপদে পড়লাম। লকডাউন হলে তো বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারবই না, উল্টো গ্যারেজ ভাড়া ও খাওয়ার বিল বাকি জমা পড়বে। মহাবিপদে পড়বো শুধু আমরাই। যাদের টাকা আছে তাদের তো এক সপ্তাহ নয়, এক মাস বসে থাকলেও সমস্যা নাই।
এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটির আশুলিয়া আঞ্চলের সভাপতি লায়ন মোহাম্মদ ইমাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের সময় নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষদের যদি বিত্তবানরা সহযোগিতা করেন তাহলে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তিনি সকল সম্পদশালী ও বিত্তবানদের নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
এ ব্যাপারে সাভার রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এখনও লকডাউনের নির্দেশনা পাইনি। যেভাবে নির্দেশনা আসবে ঠিক সেভাবেই লকডাউন কার্যকর করা হবে।
মাহিদুল মাহিদ/আরএআর