এমটিএফই’র প্রতারণার ফাঁদে খুলনার দেড় হাজার গ্রাহক
মোবাইল অ্যাপ এমটিএফই’র ফাঁদে পড়ে খুলনার কমপক্ষে দেড় হাজার গ্রাহক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অ্যাপের মাধ্যমে এমএলএম কোম্পানি এমটিএফইতে বিনিয়োগ করে তারা খুইয়েছেন ১০ কোটি টাকা। বর্তমানে তারা কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
এমটিএফই’র গ্রাহকরা জানান, এই অ্যাপে শনিবার ও রোববার বাদে সপ্তাহের অন্য ৫ দিন ট্রেডিং হতো। ২৫ হাজার টাকার সমপরিমাণ ডলার ঢুকালে সপ্তাহে ৫ দিনের প্রতিদিন ৫ ডলার করে লাভ দেওয়া হতো। ৬০ হাজার টাকা ঢুকালে সপ্তাহে ৫ দিনের প্রতিদিন ১৩ ডলার করে লাভ দেওয়া হতো। অবশ্য মাসে ২-৩ দিন কিছুটা লোকসানও হতো।
গ্রাহকরা আরও জানান, প্রতি সপ্তাহের ট্রেডিং শুরু হতো সোমবার। ওইদিন অ্যাপে ঢুকে শুধু একটি জায়গায় ক্লিক করতে হতো। এছাড়া বিনিয়োগকারীদের আর তেমন কোনো কাজ ছিল না। অল্প বিনিয়োগে অধিক লাভ এবং তেমন কোনো সময় দিতে না হওয়ায় অনেকেই হুমড়ি খেয়ে বিনিয়োগ করেন এই প্রতিষ্ঠানে।
এমটিএফই’র গ্রাহক সুজন আহমেদ বলেন, খুলনার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার কমপক্ষে দেড় হাজার মানুষ এমটিএফইতে বিনিয়োগ করেছেন।
তিনি বলেন, বাড়তি লাভের আশায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম। শুধু আমি না, পরিবারের একাধিক সদস্য এবং আমার পরিচিত অনেকেই বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন। দুবাই থেকে কুমিল্লার বাসিন্দা মাসুদ নামে একজন এই অ্যাপ পরিচালনা করে বলে তিনি জানিয়েছেন। বিনিয়োগ করা টাকা হারিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।
গ্রাহক অমিত বসু জানান, প্রথম দফায় তিনি ২৫ হাজার টাকার মতো বিনিয়োগ করেছিলেন। লাভের মুখ দেখার আগেই সেই টাকা খুইয়েছেন।
আরেক গ্রাহক রিয়াজুল ইসলাম জানান, গত ২ সপ্তাহ ধরে অ্যাপে দেখাচ্ছিল যে, সার্ভার আপগ্রেড করা হচ্ছে। তখন অ্যাপ থেকে টাকা তোলা যাচ্ছিল না। গত ৩-৪ দিন আগে তিনি বুঝতে পারেন যে, তার টাকা ওই কোম্পানির লোকজন আত্মসাৎ করেছে। তিনি প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব। প্রয়োজনে কুমিল্লায় মাসুদের বাড়িতে যাব, খোঁজখবর নিব। এভাবে ছেড়ে দিলে চলবে না।
এ ব্যাপারে খুলনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান আল মামুন জানান, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মোহাম্মদ মিলন/আরএআর