জুতা হারানো নিয়ে সালিশ, দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে একজোড়া জুতা হারানোকে কেন্দ্র করে সালিশে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মনির হোসেন নামে একজন নিহত হয়েছেন।
রোববার (২০ আগস্ট) গোসাইরহাট থানায় নিহত মনির হোসেন বেপারীর স্ত্রী নাজমা বেগম বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহত মনির হোসেন বেপারী (৪০) পেশায় একজন জেলে। তিনি গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের ছৈয়ালকান্দি গ্রামের ইসমাইল বেপারীর ছোট ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোসাইরহাটের ছৈয়াল কান্দি গ্রামের শহিদ বেপারীর স্ত্রী ফিরোজা বেগমের পঞ্চ জুতা হারানোকে কেন্দ্র করে মনির হোসেন বেপারীর স্ত্রী নাজমা বেগমের সঙ্গে ঝগড়া হয়। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বিষয়টি মিমাংসা করতে নিজেরা ও স্থানীয়রা সালিশে বসেন। সালিশ চলমান অবস্থায় ১১টার দিকে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শুকুর আলী বেপারী আবুল বেপারীকে মারধর করেন। পরে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারি শুরু করে। মারামারির সময় মনির হোসেন বেপারীকে অপর পক্ষ লোহার রড দিয়ে হামলা করে। মারাত্মক আহত মনির হোসেন বেপারীকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মনির হোসেন বেপারীর স্ত্রী নাজমা বেগমের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাতজন হলেন, শুকুর আলী বেপারী (৪৫), আশিক বেপারী (২৭), রকিব বেপারী (২৯), খালেক বেপারী (৩৭), শহীদ বেপারী (৫৮), লিটন মুন্সী (৩৫), হুসনে আরা বেগম (৩৮)। অন্য দুই আসামি হলেন, ফিরোজা বেগম, জোসনা বেগম। অভিযুক্তরা একই গ্রামের বাসিন্দা।
নিহত মনির হোসেন বেপারীর বড় ভাই আবুল বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক জোড়া নতুন ও পুরাতন জুতা একই রকম দেখতে ছিল। একে অন্যের সঙ্গে জুতা পরিবর্তন করেছে এমন অভিযোগে ঝগড়া হলে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য আমরা নিজেরা সালিশে বসি। সালিশের মধ্যে শুকুর বেপারী আমাকে চড় মারে। এরপর তারা আমাদেরকে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে রেখে মনির হোসেন বেপারীকে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়েছে। মারার সময় মাথার পেছন দিক দিয়ে রড ঢুকিয়ে দেওয়া হলে মনির মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যান।
নাজমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, যারা আমার স্বামীকে মেরেছে, তাদের আমি ফাঁসি চাই। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাই।
এ বিষয়ে গোসাইরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম শিকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, একশ টাকা দামের এক জোড়া স্যান্ডেলের জন্য দুই পক্ষের ঝগড়া মেটানোর চেষ্টা করেছিল স্থানীয়রা। সালিশের সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উপ্তপ্ত হলে সংঘর্ষে মনির নামে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছি।
সাইফ রুদাদ/আরকে