মুক্তা চাষে কপাল খুলে গেল রহমানের
করোনা মহামারীর সময় শ্রমিক বাবার সংসারে একটু সহোযোগিতা করতে ইউটিউব দেখে মুক্তা চাষের উদ্যােগ নেন আব্দুর রহমান। বাড়ির ছাদে পানির হাউস করে প্রথমে ৫০০ ঝিনুক দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে মুক্তা চাষ শুরু করেন তিনি। তাতেই আসে তার সাফল্য। এরপর বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন মুক্তা উৎপাদন। ২০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করা এই উদ্যোক্তার মুক্তা প্রজেক্টে এখন পুঁজি প্রায় ৩ লাখ টাকা।
আব্দুর রহমান যশোরের অভয়নগর উপজেলার একতারপুর গ্রামের কবির হোসেনের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তবে তার এই সাফল্যের শুরুটা হয়েছিল মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোনোর আগেই।
আব্দুর রহমান বলেন, ৫০০ ঝিনুক নিয়ে যাত্রা শুরু করে এখন এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে কয়েক হাজারে। তিন মাস আগে ঝিনুকের পাশাপাশি একই হাউস কাজে লাগিয়ে আরও কিছু করার চিন্তা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে রঙিন মাছ ছাড়ি। এ ক্ষেত্রেও আসে বড় সম্ভাবনা। এখন প্রতি মাসে কয়েক হাজার টাকার মুক্তা বিক্রি করি।
তিনি বলেন, নতুন কিছু করার তাড়না থেকে ইউটিউব দেখে মুক্তা ও রঙিন মাছ চাষ শুরু করেছিলাম। এখন আমি দেশের নামকরা বেশকিছু প্রতিষ্ঠানে মুক্তা সরবরাহ করি। একই সঙ্গে এই পেশায় যুক্ত হতে আগ্রহী তরুণ বেকারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।
আব্দুর রহমানের বাবা কবির হোসেন বলেন, ছেলের ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ডে প্রথম থেকে সহযোগিতা করেছি। এখন তার সুফল ভোগ করছি। বাড়ির ছাদে রঙিন মাছের সঙ্গে কীভাবে মুক্তা চাষ হয়, সেই বিষয়টি দেখার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা ছুটে আসে আবার অনেকে ফোন করেও জানে।
সুমন হোসেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, প্রথমে মুক্তা চাষের ব্যাপারে জানতে পেরে অবাক হয়েছি। তাই নিজের চোখে দেখতে আসলাম। আসলে এটা একটা লাভজনক প্রজেক্ট। আমিও প্রশিক্ষণ নেব।
অভয়নগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ বলেন, আব্দুর রহমান নতুন একটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করি। আমরা তার পাশে থেকে তাকে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করছি এবং করে যাব।
এ্যান্টনি দাস অপু/এমএএস