প্রধানমন্ত্রী রংপুরে যাচ্ছেন আজ, অবস্থান করবেন সাড়ে ৩ ঘণ্টা
সাড়ে চার বছর পর আজ বুধবার রংপুরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।
জনসভাকে কেন্দ্র করে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। শহরের বিভিন্ন সড়কে লাগানো হয়েছে মাইক, এলইডি ডিসপ্লে, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে শতাধিক তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টারে সাজানো হয়েছে পুরো রংপুর শহর।
সফরসূচি অনুযায়ী, রংপুরে সাড়ে ৩ ঘণ্টা অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বেলা সাড়ে ১২টায় তেজগাঁ বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার দুপুর ২টায় রংপুর ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। পরে ২টা ৫ মিনিটে ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাড থেকে সড়ক পথে রংপুর সার্কিট হাউজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ২টা ১৫ মিনিটে সার্কিট হাউজে পৌঁছে সার্কিট হাউজের মিলনায়তনে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর ঠিক ৩টায় প্রধানমন্ত্রী রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবেন। বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে জিলা স্কুল মাঠের জনসভায় উপস্থিত হবেন তিনি। পরে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি রংপুর বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
পরে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে জিলা স্কুল মাঠে জনসভায় বক্তব্য শেষে তিনি ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাডের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন সড়ক পথে। পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টার যোগে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘিরে রংপুর বিভাগজুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনার জন্য সর্বস্তরের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রোজী রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খুব আনন্দিত ও উদ্বেলিত। আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুকন্যা রংপুরের পুত্রবধূ শেখ হাসিনার আগমনে উচ্ছ্বাসে একাকার হয়ে গেছি। ১১ বছর পর আমরা তাকে রংপুরে বরণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। লাখ লাখ মানুষের ভিড়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে জিলা স্কুল মাঠে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ব্যাপক সমাগম ঘটবে, যা রংপুরের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এদিকে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে জনসভায় আসা-যাওয়া নির্বিঘ্ন করতে চায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এজন্য নগরীর বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে এক হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রবেশ রুটগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের করা হচ্ছে তল্লাশি। রংপুর মহানগরীর ২১টি পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, জনসভাকে ঘিরে সব ধরনের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছি আমরা। পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি আর্মডসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে। জনসভাস্থল ছাড়াও পথে পথে রুট ডিউটি, থাকবে চেকপোস্ট, পুরো নগরীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথ ও মোড়ে মোড়ে থাকবে সদস্যরা। উঁচু ভবনের ছাদে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর প্রতি ফ্লোরে ফ্লোরে থাকবে প্রশিক্ষিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা
মঙ্গলবার সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষ্যে রংপুরের আনাচে-কানাচে, ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যন্ত সাড়া জেগেছে। তাতে মনে হয় এই সমাবেশ মহাসমাবেশে রূপ নেবে, এই জনসমুদ্র মহাসমুদ্রে রূপ নেবে। রংপুরে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ সমাবেশ হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দু'টি নির্বাচনী জনসভা করেছিলেন। সাড়ে চার বছরের বেশি সময় পর তিনি রংপুরে আসছেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরকে