বন্ধুর বিয়েতে গিয়ে হাওরে গোসলে নেমে প্রাণ গেল দুই যুবকের
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে বন্ধুর বিয়েতে গিয়ে হাওরের পানিতে ডুবে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার গুনধর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণের বড় হাওরে পাঁচ বন্ধু মিলে গোসল করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- রাজধানীর তেজগাঁও পশ্চিম নাখালপাড়ার বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের ছেলে রাফু (২৪) ও এলাকার লাল মিয়ার ছেলে লিমন (২৫)। এদের মধ্যে রাফু ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী এবং লিমন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করিমগঞ্জ উপজেলার গুনধর বাজার এলাকার সায়েম উদ্দিনের ছেলে তৌকিরের বিয়ে ছিল গত সোমবার (৩ জুলাই) । এ উপলক্ষ্যে বিয়ের আগের দিন রোববার তার পাঁচ বন্ধু রাফু, লিমন, রাফি, জুনায়েদ ও রকি ঢাকা থেকে তৌকিরদের গ্রামের বাড়ি গুনধর বেড়াতে আসেন। মঙ্গলবার ছিল তৌকিরের বউভাত অনুষ্ঠান। সকালের নাস্তা সেরে তৌকির ও তার পাঁচ বন্ধু রাফু, লিমন, রাফি, জুনায়েদ ও রকি ফুটবল খেলেন। পরে বাড়ির পাশে গুনধর উচ্চ বিদ্যালয়ের দক্ষিণের বড় হাওরে তারা ফুটবল নিয়েই গোসল করতে যান।
গোসলের একপর্যায়ে হাওরের ডুবো সড়ক থেকে পা পিছলে রাফু, লিমন ও তৌকির খাদে পড়ে যান। সাঁতার না জানায় কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা হাওরের পানিতে তলিয়ে যান। এ সময় অন্য তিন বন্ধু সাঁতরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া তিন বন্ধু রাফু, লিমন ও তৌকিরকে উদ্ধার করেন। কিন্তু ঘটনাস্থলেই লিমনের মৃত্যু হয়। এছাড়া রাফু ও তৌকিরকে দ্রুত কিশোরগঞ্জে আনার পর রাফুকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অন্যদিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৌকিরকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে রাফুকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তার চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার তিন বন্ধু রাফি, জুনায়েদ ও রকি।
তারা বলেন, হাসপাতালে আনার পর পরই যদি রাফুকে অক্সিজেন দেওয়া হতো, তাহলে সে হয়তো বেঁচে যেত। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাফুর মৃত্যুর পর তিন বন্ধুই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার সুমন সেন বলেন, হাসপাতালে এসে দুইজনকেই মৃত পেয়েছি। হাসপাতালে আনার আগেই একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে এনে ভর্তি করার পর রাফু নামে একজনের মৃত্যু হয়।
করিমগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরএআর