‘এত বড় গরু আর কখনও পালন করব না’
আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় পবিত্র ঈদুল আজহায় বিক্রি হলো না গোপালগঞ্জ জেলার আলোচিত গরু ২৬ মণ ওজনের ‘মামা’ ও ২৪ মণ ওজনের ‘ভাগ্নে’। বিশাল দেহের এ গরু দুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গরুর মালিক সবুজ গোলদার। গরু দুটিকে বিক্রি করতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি গ্রামের সবুজ গোলদার এবারের কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করছিলেন মামা ও ভাগ্নে নামের গরু দুটি। প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে গরু দুটিকে পরম যত্নে পালন করে আসছেন তিনি। গরু দুটিকে কোরবানিতে বিক্রির জন্য নিয়েছিলেন দেশের সর্ববৃহৎ কোরবানির পশুর হাট গাবতলীতে। টানা পাঁচদিন হাটে থেকেও বিক্রি করতে পারেননি। গরু দুটির দাম ১৯ লাখ টাকা চাওয়া হলেও দাম উঠেছিল মাত্র ১০ লাখ টাকা। ফলে আশানুরূপ দাম না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
গরু দুটির প্রতিদিন খাবার খরচ হয় প্রায় পনেরশ টাকা। যা এই গরিব কৃষকের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। ফলে গরু দুটিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সবুজ গোলদার। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
সবুজ গোলদারের স্বপ্ন ছিল গরু দুটিকে বিক্রি করে নিজের জরাজীর্ণ ঘরটির মেরামত করার ও একটি গরুর খামার দেওয়ার। যা এ বছর আর পূরণ হলো না। ভালো কোনো ব্যবসায়ী ও আশানুরূপ দাম পেলে গরু দুটিকে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, গাবতলীর হাটে নিয়েছিলাম। সেখানে দুটি গরুর দাম দশ লাখ উঠেছিল। কিন্তু সেই দামে আমি বিক্রি করিনি। গরু দুটিকে নিয়ে আমি এখন বিপাকে পড়েছি। গরু দুটির পেছনে প্রতিদিন আমার ১৫শ টাকার বেশি খরচ হয়। আমি গরিব মানুষ আগামী এক বছর এ গরু দুটিকে পালন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কোন ব্যবসায়ীর কাছে ভালো দাম পেলে গরু দুটিকে বিক্রি করে দেব। আর এত বড় গরু কখনও পালন করব না।
এ বিষয়ে গরুর মালিক সবুজ গোলদারের ছেলে সৌরভ গোলদার বলেন, আমার বাবার সঙ্গে আমি ঢাকার গাবতলীর পশুর হাটে গরু দুটিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। এই গরু দুটিকে হাটে আনা-নেওয়ায় আমাদের প্রায় লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। বাবা কে বলেছি আর কখনও এতো বড় গরু পালন না করতে। আমরা আর কখনও এতো বড় গরু পালন করব না।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোবিন্দ চন্দ্র সরদার বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি কোটালীপাড়ার বান্ধাবাড়ি গ্রামের সবুজ গোলদারের মামা ও ভাগ্নে নামে গরু দুটি বিক্রি হয়নি। বিক্রি না হওয়ার কারণ আশানুরূপ দাম না পাওয়া। আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করব। এছাড়া তিনি যদি কোনো বড় ধরনের অনুষ্ঠানে বিক্রি করতে চান বিক্রি করতে পারেন। কেননা এত বড় গরু এক বছর পালনে অনেক খরচ। তাই বিক্রি করে দেওয়া ভাল।
আরকে