বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপরে সুরমা
টানা বৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে সব উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়ক প্লাবিত হয়ে বসত ঘরে পানি ঢুকছে। ফলে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে মানুষ।
ছাতক উপজেলা পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৩ সেন্টিমিটার ওপরে চলে গেছে দিরাই উপজেলায়। সীমান্ত উপজেলা দোয়ারাবাজারে ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়ে সড়ক ডুবে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। একই অবস্থা তাহিরপুরে। সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা, দুর্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় পানি ওঠায় বন্ধ রয়েছে সুনামগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ। দুর্ভোগ আর ভোগান্তি নিয়ে নৌকায় পারাপার হচ্ছে মানুষ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সোমবার (৩ জুলাই) সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ স্টেশনে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ৭.৯৬ মিটারে প্রবাহিত হয়েছে। বেলা ১২টায় ৩ সেন্টিমিটার বেড়ে ৭.৯৯ মিটার সমতলে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপরে। জেলায় গত কয়েকদিনে মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বছরের সর্বোচ্চ ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল। আজও সুনামগঞ্জে ১৭০ মিলিমিটার এবং ছাতকে ২১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্ভাবাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, সুনামগঞ্জে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এতে ঢলের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে।
বন্যা মোকাবিলায় জরুরি সভা করেছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রয়েছে উদ্ধারকাজের জন্য নৌকা, স্বেচ্ছাসেবক, খাবারের জন্য চাল, নগদ টাকা, শুকনো খাবার ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট। মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। যেকোনো সময় বন্যা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
সোহানুর রহমান সোহান/আরকে