কিশোরগঞ্জে বিএনপির সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষ, আহত ৩০
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১ জুলাই) দুপুরে অষ্টগ্রাম বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুলসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে ৭-৮টি মোটরসাইকেল।
বিএনপির অভিযোগ, পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করেছে। এ নিয়ে পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মাহাবুব আলম আক্তার, বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আলম ও ইটনা উপজেলা যুবদল নেতা রিয়েল মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অষ্টগ্রাম উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তিতুমীর হোসেন সোহেলকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল বিএনপির। বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মো. ফজলুর রহমান শনিবার দুপুরে নৌপথে তার নিজ নির্বাচনী এলাকা অষ্টগ্রামে যান। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী তাকে নিয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, আমি উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার পথেই লাঠিসোঁটা হাতে মিছিল নিয়ে এসে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। গত ১০ বছর ধরে আমাকে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে কোনো মিছিল মিটিং করতে দেওয়া হয়নি। নেতাকর্মীদের দমিয়ে রাখতে একের পর এক গায়েবি মামলা আর গ্রেপ্তার-নির্যাতন চালানো হয়েছে। আজ পুলিশের নেতৃত্বে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। গণতান্ত্রিক দেশে এটা কাম্য নয়।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম জেমস বলেন, বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল জিরো পয়েন্টে। আমরা সেদিকে যাইনি। আমাদের ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা অষ্টগ্রাম বাজার এলাকায় মিছিল করছিলেন। সদ্য সাবেক সফল প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ আগামী চার জুলাই অষ্টগ্রামে আসবেন। এ উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে মিছিল ছিল। কিন্তু বিএনপির লোকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে অষ্টগ্রাম বাজারে প্রবেশ করে। তখন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছাত্রলীগের মিছিলে অতর্কিত হামলা করেন। এতে ছাত্রলীগের ১০ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছেন। হামলার খবরটি যখন চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তাদের আরও নেতাকর্মী আসেন। পরে পাল্টা-পাল্টি ধাওয়া হয়। ছাত্রলীগ কোনো হামলা করেনি।
অষ্টগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান বলেন, বিএনপির মিছিল থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উদ্দেশ্যে দু-তিনটি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। তখন পুলিশ মাঝখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আনা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সঠিক নয়।
আরএআর